আর্কানসাসের বাসিন্দা জেফরি ওয়াকার নামের এক ট্রাক চালক যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।
গত ১৩ই জুন, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে, লুইসভিল শহরের কাছাকাছি আই-৬৫ সাউথ হাইওয়ের উপর একটি অর্ধ-ডজন চাকার ট্রাকের (semi-truck) আগুন ধরে যায়। এরপর সেটি বিস্ফোরিত হয়ে একটি ফ্লাইওভার থেকে প্রায় ২০ ফুট নিচে পরে যায়।
খবর সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় চালক জেফরি ওয়াকার জ্বলন্ত ট্রাক থেকে লাফ দেন, যার ফলে গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
লুইসভিল ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তারা জানান, ট্রাকটি যখন ফ্লাইওভারের উপর ছিল, তখন সেটির একাংশ ঝুলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার পর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ট্রাকটি বিস্ফোরিত হয় এবং নিচে পড়ে যায়।
জেফরি ওয়াকারের স্ত্রী শ্যানন টেক্সেইরা একটি GoFundMe পেজ খুলে স্বামীর চিকিৎসার খরচ এবং পরিবারের অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন।
শ্যানন টেক্সেইরা তার পোস্টে লেখেন, “ট্রাকটি ব্রিজের উপর ভয়ঙ্করভাবে ঝুলছিল, ট্রেইলারটি আকাশের দিকে ছিল। জেফরি ভেতরের দরজা ও জানালা খোলার চেষ্টা করেও বের হতে পারছিলেন না।
এরপর যখন আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন তিনি কোনোমতে গাড়ির দরজা খুলে প্রায় ৬ মিটার (২০ ফুট) নিচে লাফ দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ট্রাকটিতে বিস্ফোরণ ঘটে।”
তিনি আরও জানান, “এটা একটা অলৌকিক ঘটনা যে তিনি (জেফরি) বেঁচে গিয়েছেন।
দুর্ঘটনায় জেফরি ওয়াকারের পা, গোড়ালি এবং একটি হাড় ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।
তার সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগবে। যেহেতু তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী, তাই তিনি এখন কাজ করতে পারছেন না।
এমতাবস্থায় পরিবারটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
GoFundMe পেজে সাহায্যের জন্য আবেদন করার পর ১৮ই জুনের মধ্যে ১৭০০ ডলারের বেশি উঠেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকার বেশি (প্রতি ডলার = ১১০ টাকা)।
তাদের ২০,০০০ ডলার (২২ লক্ষ টাকার বেশি) সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণে কেনটাকি রাজ্যের পরিবহন বিভাগ (KYTC) জরুরি ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে যায় এবং আই-৬৫ সাউথের সব লেন বন্ধ করে দেয়।
লুইসভিলের মেয়র ক্রেইগ গ্রিনবার্গ এক বিবৃতিতে জানান, “আজকের দুর্ঘটনায় আহত চালক সৌভাগ্যক্রমে অক্ষত আছেন এবং সামান্য আঘাত নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। অন্য কেউ আহত হননি।
আমি আমাদের দমকল কর্মীদের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য কৃতজ্ঞ।”
তিনি আরও জানান, মে মাসেও একই ধরনের একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল এবং নিরাপত্তা উন্নতির কাজ চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
তথ্য সূত্র: ইউএস নিউজ রিপোর্ট