বিয়ের অনুষ্ঠানে কনের বাবার “আত্ম-কেন্দ্রিক” ভাষণ, বিব্রত ক’রে তুলল অতিথিদের।
বিয়ের একটি অনুষ্ঠানে কনের বাবার করা “আত্ম-কেন্দ্রিক” ভাষণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে সম্প্রতি, যেখানে কনের বাবা নিজেই বিবাহ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছিলেন। জানা গেছে, তিনি নাকি আর্থিক সাহায্য করার শর্ত হিসেবে এই কাজটি করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন অতিথি, যিনি রেডডিটের “ওয়েডিং শেইমিং” ফোরামে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, জানিয়েছেন যে কনের বাবার আচরণ ছিল খুবই অপ্রত্যাশিত। ওই ব্যক্তি জানান, কনের বাবা অনুষ্ঠানে একটি “অ্যামেচার স্ট্যান্ড-আপ কমেডি” পরিবেশন করেন, যেখানে তিনি মূলত তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। হাস্যরসের মোড়কে পরিবেশিত হলেও, উপস্থিত অতিথিদের কাছে বিষয়টি বেশ অস্বস্তিকর ঠেকে।
ওই অতিথি আরও জানান, কনের বাবা তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে হওয়া বিভিন্ন ঝগড়ার বিষয়গুলো বোঝানোর জন্য কিছু “প্রপস” বা সরঞ্জাম ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার, যা তিনি স্ত্রীর সঙ্গে গাড়ি চালানোর সময় গ্যাস ভরার ঝগড়ার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া, পুরনো একটি মোবাইল ফোন ছিল, যা টেক্সট মেসেজের উত্তর না দেওয়ার কারণে তাঁদের মধ্যে হওয়া তর্ক বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। এমনকি, একটি পুরনো কফি মেকার এবং একটি ছেঁড়া আন্ডারশার্টও তিনি দেখিয়েছিলেন, যা স্ত্রী বদলাতে চাইলেও তিনি রাজি ছিলেন না।
কনে এবং বরকে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল, কারণ কনে বাবার বক্তৃতা চলতেই থাকে। অনুষ্ঠান শেষে অনেক অতিথিই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, “এসব কি?”
শুধু তাই নয়, রিসেপশনেও কনের বাবা একই ধরনের আচরণ করেন। কনের মা ও ভাইবোনদের সুন্দর ও আবেগপূর্ণ বক্তব্যের পর যখন কনের বাবার বলার পালা আসে, তখনও তিনি নবদম্পতিকে হতাশ করেন। তিনি তাঁর কর্মজীবন, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতামত, নিজের গাড়ি এবং স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়ার কথা বলতে শুরু করেন। এমনকি, তাঁর অন্য সন্তানদের বিয়ের কথাও তিনি উল্লেখ করেন, তবে কনে ও বরের দিকে তেমন একটা নজর দেননি।
রেডডিটের ব্যবহারকারীরা এই ঘটনাটিকে “ভীতিকর” আখ্যা দিয়েছেন এবং কনের বাবার এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন। অনেকে মন্তব্য করেছেন, তিনি যেন পুরো অনুষ্ঠানটি নিজের জন্য তৈরি করেছিলেন।
এই ঘটনার পরে, অনেকেই তাঁদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, তিনি তাঁর রিসেপশনের সঞ্চালককে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছিলেন যে কোনো অবস্থাতেই যেন তাঁর শ্বশুরকে মাইক্রোফোনটি ধরিয়ে দেওয়া না হয়।
বিয়ের মতো একটি পবিত্র অনুষ্ঠানে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এমন অপ্রত্যাশিত আচরণ সত্যিই দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রতিটি অনুষ্ঠানেই শালীনতা বজায় রাখা উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল