মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক মহলে, ইরান-ইসরায়েল সংকট নিয়ে তীব্র মতভেদ দেখা দিয়েছে। এই বিভাজন এখন শুধু রাজনৈতিক আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং তা দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
খবর অনুযায়ী, এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং এর মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (MAGA) আন্দোলনের সমর্থক মিডিয়াগুলো, বিশেষ করে ফক্স নিউজ, ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছে। তারা মনে করে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ করা উচিত।
ফক্স নিউজের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, যেমন শন হেনিটি, তাদের অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। তারা প্রায়শই ট্রাম্পকে ইরানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে উৎসাহিত করছেন।
অন্যদিকে, MAGA আন্দোলনের মধ্যেই এমন কিছু কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে আরও সতর্ক হওয়ার কথা বলছেন। এই গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান প্রতিনিধি হলেন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ভাষ্যকার টাকার কার্লসন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলে সরাসরি জড়িত হওয়ার বিরোধিতা করছেন এবং ইসরায়েল-ইরান সংঘাত থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। কার্লসন মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া।
এই বিভাজন শুধু টেলিভিশন বা রেডিওর আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ নেই। সামাজিক মাধ্যম বিশেষ করে X (সাবেক টুইটার)-এও এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বিভিন্ন পডকাস্টেও এই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত প্রকাশ করা হচ্ছে। স্টিভ ব্যাননের ‘ওয়ার রুম’-এর মতো জনপ্রিয় পডকাস্টগুলোতেও এই বিতর্কের ঢেউ লেগেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিডিয়া এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিভাজন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ট্রাম্প যদি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে এই বিভাজন তার নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।
ফক্স নিউজের প্রভাবশালী ভাষ্যকারদের মতামত ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা প্রভাব ফেলে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তবে, এই বিতর্কের মাঝে ট্রাম্প নিজে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ব্যাখ্যা নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অর্থ কী, তা তিনিই নির্ধারণ করবেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন