যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে তীব্র গরম, বাংলাদেশেও কি একই ধরনের পরিস্থিতি?
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে এখন তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সামনের সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, কারণ একটি শক্তিশালী “হিট ডোম” তৈরি হতে যাচ্ছে। এটি সেখানকার তাপমাত্রা অনেক বাড়িয়ে দেবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমাদের দেশেও কি এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (National Weather Service) জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসি (Washington, DC) থেকে ফ্লোরিডার (Florida) কিছু অংশ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ তীব্র গরমের ঝুঁকিতে রয়েছে। গরমের কারণে মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, যাদের পর্যাপ্ত শীতলীকরণের ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য এই গরম আরও বেশি কষ্টকর হবে।
এই সপ্তাহে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (Celsius) কাছাকাছি থাকতে পারে। তবে আর্দ্রতার কারণে এটি আরও বেশি অনুভূত হবে। আবহাওয়ার কারণে রাতের বেলাতেও তেমন একটা ঠান্ডা থাকবে না। ফলে গরম আরও বেশি কষ্ট দেবে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে উচ্চচাপের কারণে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে গরম ও আর্দ্র বাতাস যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আসছে। এর ফলে গরম আরও তীব্র হবে এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে অনুভূত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (Thursday) তাপমাত্রা ভার্জিনিয়া (Virginia) এবং ক্যারোলিনাতে (Carolinas) সবচেয়ে বেশি থাকতে পারে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল (Northeast) এবং মধ্য-পশ্চিমের (Central US) কিছু অংশেও তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে “হিট ডোম” তৈরি হওয়ার কারণে তাপমাত্রা অন্তত ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে মধ্য-আটলান্টিক অঞ্চলে (Mid-Atlantic) তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। গরমের কারণে মানুষের অসুস্থ হওয়ার সম্ভবনাও বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গরমের কারণে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। গরমের কারণে মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, যাদের পর্যাপ্ত শীতলীকরণের ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য এই গরম আরও বেশি কষ্টকর হবে।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে রাতের বেলায়ও তাপমাত্রা বাড়ছে। ফলে মানুষের শরীর ঠান্ডা হওয়ার সুযোগ কম হচ্ছে, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই সময়ে গ্রীষ্মকাল শুরু হয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতে সূর্যের আলো বেশি থাকার কারণে গরম আরও তীব্র হবে। সাধারণত, জুলাই ও আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অংশে সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। তবে এবার গ্রীষ্মের শুরুতেই এমন গরম অনুভূত হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে দেখা যায়, এখানেও গরমের সময় আর্দ্রতা অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমের আগে, যখন তাপমাত্রা বেশি থাকে, তখন এটি আরও বেশি অস্বস্তিকর হয়।
গরম থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা, হালকা পোশাক পরা এবং সরাসরি সূর্যের আলোতে যাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া, ঘরের বাইরে বেশি কাজ করা উচিত না।
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের এই গরমের পরিস্থিতি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়তে পারে। তাই, গরম থেকে বাঁচতে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন (CNN)