বিমানবন্দরের কর্মীদের তৎপরতায় হারানো হীরার টুকরো ফিরে পেলেন এক নারী।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া এক বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল বিশ্ব। দীর্ঘ ভ্রমণের পর অবশেষে নিজের গন্তব্যে ফিরছিলেন এপ্রিল স্কমিট। কিন্তু বিধি বাম! পিটসবার্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজের বেল্টে হাত দিতে গিয়ে বিপত্তি। একটি দুর্ঘটনায় তাঁর বাগদানের আংটির মূল্যবান হীরার টুকরোটাই হারিয়ে যায়। এরপর যা ঘটল, তা সত্যিই মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৩ই জুন, শুক্রবার। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ১৭ দিনের কাজ শেষে অবশেষে বাড়ি ফিরছিলেন এপ্রিল। বিমানবন্দরে লাগেজ নেওয়ার সময়, তাঁর হাত লাগেজের সাথে আটকে যায়। দ্রুত হাত সরিয়ে নিলেও, ততক্ষণে যা ঘটার, তা ঘটে গেছে। আংটি থেকে একটি হীরার টুকরো নেই!
আবেগাপ্লুত এপ্রিল জানান, “আমি সাথে সাথেই বুঝতে পারলাম আমার আংটি থেকে হীরাটি নেই। যেন বুকটা ভেঙে গেল।” এরপর শুরু হয় আসল যুদ্ধ। দ্রুত তিনি বিমানবন্দরের কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করেন।
এরপর শুরু হয় কর্মীদের তৎপরতা। বিমানবন্দরের কর্মীরা ছুটে আসেন সাহায্যের জন্য। প্রায় ৯০ মিনিটের চেষ্টায় তাঁরা বিমানবন্দরের বিশাল কারুশিল্পের মধ্যে হীরার খোঁজে তল্লাশি চালান। টম রিওর্ডান নামের এক কর্মী জানান, “এটি ছিল যেন লোহার জাল।” এমনকি তাঁরা মেঝে খুঁড়েও হীরাটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। প্রথমে যদিও তাঁদের চেষ্টা সফল হয়নি, কিন্তু তাঁরা হাল ছাড়েননি।
এপ্রিল যখন বাড়ি ফিরে গেছেন, তখনও বিমানবন্দরের কর্মীরা তাঁদের অনুসন্ধান চালিয়ে যান। অবশেষে, ঘটনার চার ঘণ্টা পর, কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমে হাসি ফোটে এপ্রিলের মুখে। তাঁরা জানান, হীরাটি খুঁজে পাওয়া গেছে!
জানা যায়, দুটি পেইন্ট স্টিক ব্যবহার করে, তাঁরা বেল্টের নীচ থেকে মাটি সরিয়ে হীরাটি খুঁজে পান। এপ্রিলের ভাষায়, “আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। এতটাই আনন্দিত হয়েছিলাম যে, দ্রুত বিমানবন্দরে ছুটে গিয়েছিলাম।”
আশ্চর্যজনকভাবে, এপ্রিলের স্বামী ৩০ বছর আগে ১৩ই মার্চ, শুক্রবার তারিখে আংটিটি দিয়ে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং তাঁরা বিয়ে করেন ১৯৯২ সালের ১৩ই নভেম্বর, শুক্রবার। আর হীরাটি হারানো গিয়েছিল ১৩ই জুন, শুক্রবার তারিখে।
এপ্রিল স্কমিট বিমানবন্দরের কর্মীদের এই প্রচেষ্টাকে মানবতাবোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “এই মানুষগুলো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। আমার স্বামী বা আংটি সম্পর্কেও তাঁদের কোনো ধারণা ছিল না। কিন্তু তাঁরা সঠিক কাজটি করতে একনিষ্ঠ ছিলেন।”
কর্মীদের মধ্যে স্টিভ টার্কালি নামের একজন জানান, “এই ঘটনার একটি সুন্দর পরিসমাপ্তি ঘটাতে পেরে আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছি।”
তথ্য সূত্র: পিপল