যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক শিক্ষিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু, ১৪ বছর পরও রহস্যের জট।
ফিলাডেলফিয়ার একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষিকা ছিলেন ২৭ বছর বয়সী এলেন গ্রিনবার্গ। ২০১১ সালে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। প্রথমে এটিকে হত্যা হিসেবে গণ্য করা হলেও পরে আত্মহত্যা বলে রায় দেওয়া হয়। কিন্তু এই রায়ের সঙ্গে একমত নন এলেনের বাবা-মা।
তাদের একটাই প্রশ্ন, তাদের আদরের মেয়ের মৃত্যুরহস্যের সমাধান কবে হবে?
এলেনের বাবা-মা স্যান্ডি ও জশ গ্রিনবার্গ তাদের মেয়ের মৃত্যুরহস্য উন্মোচনের জন্য গত ১৪ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের একটাই লক্ষ্য, মেয়ের প্রকৃত মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা। শুরুতে ঘটনার তদন্তকারীরা এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে রায় দিলেও, গ্রিনবার্গ দম্পতি কিছুতেই তা মানতে রাজি হননি।
তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
ডিসেম্বর মাসের ছুটিতে এলেন তার বাবা-মা এবং বাগদত্তার সঙ্গে ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্ট কিটসে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। তারা সবাই বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছিলেন। এর কয়েক সপ্তাহ পরই ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। এলেনকে তার অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তার শরীরে ছিল ২০টির বেশি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।
ঘটনার তদন্তে প্রথমে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবেই ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরে মেডিকেল পরীক্ষক এটিকে আত্মহত্যা বলে রায় দেন। এরপরই যেন সব ওলট-পালট হয়ে যায়।
গ্রিনবার্গ দম্পতি তাদের মেয়ের মৃত্যুরহস্যের জট খুলতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তারা খ্যাতনামা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেন। তাদের অনুসন্ধানে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানান, এলেনের শরীরে আঘাতের ধরন দেখে আত্মহত্যা বলে মনে হয় না। বরং এটি সাজানো একটি হত্যাকাণ্ড।
মেয়ের মৃত্যুরহস্যের কিনারায় পৌঁছতে না পেরে তারা আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের কাছে তারা এই মামলার পুনরায় তদন্তের আবেদন জানান। এমনকি তারা ফিলাডেলফিয়া শহরের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলাও করেন।
দীর্ঘদিন আইনি লড়াইয়ের পর, সম্প্রতি একটি সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। আদালতের নির্দেশে এখন এলেনের মৃত্যুরহস্য নতুন করে মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চলছে।
এলেনের বাবা-মা তাদের মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে এখনো লড়ে যাচ্ছেন। তারা চান, তাদের মেয়ের মৃত্যুরহস্যের সঠিক তদন্ত হোক এবং দোষীরা শাস্তি পাক। তাদের একটাই প্রশ্ন, কবে তারা তাদের মেয়ের মৃত্যুরহস্যের জট খুলতে পারবেন?
তথ্য সূত্র: পিপলস