লন্ডনে নিজ বাসভবনে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক জেনিফার অ্যাবট। তাঁর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ একটি দামি রলেক্স ঘড়ি খুঁজছে, যা সম্ভবত তাঁর বাড়ি থেকে চুরি হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন লন্ডনের ক্যামডেন এলাকায় নিজের বাড়িতে ৬৯ বছর বয়সী জেনিফার অ্যাবটকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল।
ঘটনার তদন্তে নেমেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেনিফার অ্যাবট, যিনি পেশাগত জীবনে সারা স্টেইনবার্গ নামেই পরিচিত ছিলেন, সবশেষ ১০ জুন প্রতিবেশীদের চোখে পড়েন। সেদিন তিনি তাঁর পোষা একটি কর্গি কুকুরের সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন।
১৫ জুন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জেনিফারকে প্রথম দেখেন তাঁর এক ভাগ্নি এবং প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশীদের একজন জানান, তিনি তাঁর ভাগ্নির চিৎকার শুনে ছুটে যান।
ভাগ্নি তখন বলছিলেন, ‘কেউ আমাকে সাহায্য করুন, কেউ সাহায্য করুন।’ প্রতিবেশীর ছেলে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি জেনিফারকে বিছানায় কম্বল দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় দেখতে পান।
তাঁর মুখে টেপ লাগানো ছিল। ঘটনার সময় জেনিফারের কুকুরটি তিন দিন ধরে বাথরুমের ভেতরে বন্দী ছিল।
তদন্তকারীরা এই হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছেন। এরই মধ্যে তাঁরা জেনিফারের বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া একটি মূল্যবান রলেক্স ঘড়ি সম্পর্কে তথ্য চেয়েছেন।
ঘড়িটির ডায়মন্ড-খচিত একটি বিশেষ মুখ রয়েছে বলে জানা গেছে।
জেনিফার অ্যাবট একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেত্রী ছিলেন। তাঁর নির্মিত ‘ওয়ার অফ দ্য গডস’ (War of the Gods) নামের একটি তথ্যচিত্র ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর ছবিগুলোতে কেট হাডসন, প্যারিস হিলটন এবং ব্লুজ ব্রাদার্স ও ঘোস্টবাস্টার্স অভিনেতা ড্যান অ্যাক্রয়েডের মতো তারকাদের সঙ্গে তাঁর উপস্থিতি দেখা গেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেনিফার সম্প্রতি পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সম্ভবত অস্ত্রোপচারও করিয়েছিলেন।
ক্যামডেনের পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা চিফ সুপারিনটেনডেন্ট জেসন স্টুয়ার্ট এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ভয়ানক ঘটনার বিষয়ে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছি। সামান্যতম তথ্যও আমাদের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, যা জেনিফারের খুনীকে শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত টহলদারি চলছে এবং কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তদন্ত করছেন।
তথ্য সূত্র: পিপলস