ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে তেলের বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। শুক্রবার সকালে তেলের দাম কিছুটা কমেছে, সেই সাথে এশিয়ার শেয়ার বাজারেও মিশ্র প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন তাকিয়ে আছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে কিনা সেই দিকে।
শুক্রবার সকালে, যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ০.২৪ ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ৭৩.৬৪ ডলারে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮,৫০০ টাকার সমান। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দামও ০.১৮ ডলার কমে ৭৫.৬৬ ডলারে (প্রায় ৮,৭০০ টাকা) এসে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। কারণ, বিশ্বের অনেক দেশের তেল সরবরাহ এই প্রণালী দিয়েই হয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের দিকেও নজর রাখছেন। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্প এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে, এখনো পর্যন্ত তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।
জাপানের শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। দেশটির প্রধান সূচক নিক্কেই ২২৫ সামান্য ০.২ শতাংশ কমে ৩৮,৪০৩.২৩-এ দাঁড়িয়েছে। মে মাসে জাপানের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, যা দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
অন্যদিকে, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.৮ শতাংশ বেড়ে ২৩,৪২৮.১৩-তে পৌঁছেছে। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ০.১ শতাংশ কমে ৩,৩৫৭.৮৮-এ দাঁড়িয়েছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে।
এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়ার এস&পি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.২ শতাংশ কমে ৮,৫০৫.৫০-এ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১.৫ শতাংশ বেড়ে ৩০২১.৮৪-এ এসে দাঁড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তাদের প্রধান সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে, যা ছিল ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, সেদিকে তারা নজর রাখছে।
ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর পতন হয়েছে। এক ডলারের বিনিময় মূল্য ১৪৫.৩৭ ইয়েন, যেখানে আগে ছিল ১৪৫.৪৬ ইয়েন। ইউরোর দর বেড়ে ১.১৫২ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, তেলের দাম বাড়লে আমদানি খরচ বাড়বে, যা দেশের বাজারে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস