মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঔষধ প্রশাসন বিভাগ (এফডিএ)-এর ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়েছে। জানা গেছে, ঔষধের সংকট এড়াতে গিয়ে তারা ভারতের কিছু দুর্বল মানের ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে, যা ঔষধের গুণগত মান এবং রোগী নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এফডিএ-এর কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে ভারতের এমন সব ঔষধ কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্রে ঔষধ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছেন, যাদের কারখানায় ঔষধ তৈরির প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত দুর্বল মানের।
অনেক ক্ষেত্রে, কারখানার পরিবেশ ছিল অপরিষ্কার, পরীক্ষাগারে ছিল ত্রুটি, এবং ঔষধের গুণগত মান পরীক্ষার প্রক্রিয়াতেও ছিল কারচুপি। এইসব কারখানায় উৎপাদিত ঔষধের মধ্যে কিছু ঔষধের কারণে রোগীদের স্বাস্থ্যহানি ঘটেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঔষধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের ঔষধ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কারণে রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে।
একইসঙ্গে, ঔষধের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে এফডিএ-এর দুর্বলতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ঔষধের মান এবং নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুন আরও কঠোর করা উচিত বলে মনে করেন অনেকে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এফডিএ-এর এই সিদ্ধান্তের কারণে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
অনুমোদন পাওয়া ঔষধগুলোর মধ্যে কিছু ঔষধের কারণে রোগীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকের শরীরে ঔষধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে, এমনকি কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
যদিও ঔষধের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এই ঘটনার পর, ঔষধ প্রশাসন বিভাগ জানিয়েছে যে তারা ঔষধের গুণগত মান পরীক্ষা করার জন্য একটি ‘ঝুঁকি-ভিত্তিক পদ্ধতি’ অনুসরণ করে।
তবে, কোন কোন ঔষধ পরীক্ষা করা হয়েছে এবং পরীক্ষার ফল কী ছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে তারা রাজি হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এফডিএ-এর আরও বেশি স্বচ্ছ হওয়া উচিত। একইসঙ্গে, ঔষধের উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং পরীক্ষার বিষয়ে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসনকেও ঔষধের মান এবং নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, যাতে আমাদের দেশের রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো যায়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন