Telegram-এর প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুров, যিনি একাধারে একজন প্রযুক্তিবিদ এবং উদ্যোক্তা, তাঁর বিপুল পরিমাণ সম্পদের উত্তরাধিকার নিজের শতাধিক সন্তানের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ফরাসি রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘লে পয়েন্ট’-এ প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে দুров জানান, তাঁর এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো সন্তানদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ তৈরি না হওয়া। তাঁর মতে, সম্পর্কের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া ছয় সন্তান এবং শুক্রাণু দানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া অন্যান্য সন্তানদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তাঁর সব সন্তানই সমান অধিকার পাবে। দুров বলেন, “আমি চাই না, আমার মৃত্যুর পর তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করুক।”
বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাস করা এই রুশ নাগরিক জানিয়েছেন, তাঁর উইল লেখার কারণ হলো নিজের কাজ ও টেলিগ্রামের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তাঁর মতে, যারা সমাজের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কাজ করে, তাদের অনেক শত্রু থাকে, এমনকি শক্তিশালী রাষ্ট্রও তাদের প্রতিপক্ষ হতে পারে। তিনি চান, তাঁর সন্তানেরা একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক এবং নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠুক। তাই উত্তরাধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।
জানা গেছে, তাঁর সন্তানেরা এখনই এই সম্পদের সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। উত্তরাধিকারের সুবিধা পেতে তাদের জন্য ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। দুров চান, তাঁর সন্তানেরা যেন সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করে, নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে কিছু তৈরি করে। তিনি বলেছেন, “আমি চাই তারা কারও ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হোক।”
ব্লুমবার্গের হিসাব অনুযায়ী, দুরোভের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে দুরোভ এই ধরনের হিসাবকে ‘আনুষ্ঠানিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু তিনি টেলিগ্রাম বিক্রি করছেন না, তাই এই হিসাবের কোনো গুরুত্ব নেই। তাঁর মতে, তাঁর তরল সম্পদ অনেক কম, যা মূলত ২০১৩ সালে বিটকয়েনে বিনিয়োগের ফল।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে টেলিগ্রামের ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক বিলিয়নের বেশি। ব্যবহারকারীদের মধ্যে এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং তথ্যের গোপনীয়তা বিশেষভাবে পরিচিত। যদিও টেলিগ্রামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। মাদক পাচার, অর্থ পাচার এবং শিশু পর্নোগ্রাফির মতো ঘটনার সঙ্গেও এর নাম এসেছে। যদিও দুров এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, “অপরাধীরা তাদের কাজে আমাদের মেসেজিং পরিষেবা ব্যবহার করে, তাই যারা এই পরিষেবা পরিচালনা করেন, তাদের অপরাধী বলা যায় না।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন