মারথা’স ভিনইয়ার্ড: ‘জস’ সিনেমার খ্যাতি আর আদিবাসী ওয়াাম্পানোয়াগদের টিকে থাকার লড়াই।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হলো মারথা’স ভিনইয়ার্ড দ্বীপ। এই দ্বীপটি একদিকে যেমন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ধনী-সেলিব্রিটিদের আনাগোনা দিয়ে সুপরিচিত, তেমনই এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এখানকার আদিবাসী ওয়াাম্পানোয়াগ জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি আর টিকে থাকার সংগ্রাম।
মারথা’স ভিনইয়ার্ডে ওয়াাম্পানোয়াগদের বসবাস কয়েক হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু পর্যটকদের কাছে এই দ্বীপের পরিচিতি ‘জস’ (Jaws) সিনেমার কারণে। স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত এই বিখ্যাত সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর দ্বীপটির পরিচিতি যেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে থাকায় একদিকে যেমন স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হয়েছে, তেমনই ওয়াাম্পানোয়াগ সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ওয়াাম্পানোয়াগ জনগোষ্ঠীর একজন সদস্যের ভাষ্যমতে, “জস” সিনেমা মুক্তি পাওয়ার আগে মারথা’স ভিনইয়ার্ড তুলনামূলকভাবে একটি অপরিচিত দ্বীপ ছিল। সিনেমাটি মুক্তির পর পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকে, যা দ্বীপটিকে একটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত করে।
কিন্তু এর ফলে জমির দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যায়, যা আদিবাসী ওয়াাম্পানোয়াগদের জন্য তাদের পূর্বপুরুষদের জমি টিকিয়ে রাখা কঠিন করে তোলে।
আদিবাসী এই সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই আজও অব্যাহত রয়েছে। তাদের অভিযোগ, পর্যটকদের ভিড়ে তাদের সংস্কৃতি যেন একরকম চাপা পড়ে গেছে।
দ্বীপের আকর্ষণ এখন আর তাদের ঐতিহ্য নয়, বরং “জস” সিনেমার স্মৃতিচিহ্ন, নামিদামি তারকাদের আনাগোনা, অথবা বিলাসবহুল জীবনযাত্রা।
ওয়াাম্পানোয়াগ সম্প্রদায়ের সদস্যরা মনে করেন, তাদের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে সম্মান জানানো উচিত। তারা চান, দ্বীপের পর্যটন শিল্প যেন তাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়।
তাদের দীর্ঘদিনের বাসভূমি এবং সংস্কৃতি রক্ষার জন্য তারা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মারথা’স ভিনইয়ার্ডের এই খ্যাতি ওয়াাম্পানোয়াগদের জন্য একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, তেমনই তাদের সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সুযোগও এনে দিয়েছে।
তারা চান, দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষ তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং সংগ্রামের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হোক। তাদের প্রত্যাশা, এই দ্বীপ শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেই নয়, বরং ওয়াাম্পানোয়াগদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের জন্যেও পরিচিতি লাভ করুক।
তথ্য সূত্র: পিপল