যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত, ট্রাম্প প্রশাসনের রাজ্যগুলোকে পরিবহন তহবিল দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিবাসন বিষয়ক শর্ত জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দিয়েছে। মূলত, রাজ্যের সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ক সহযোগিতা না থাকলে, তাদের পরিবহন খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তার বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছেন আদালত।
রড আইল্যান্ডে অবস্থিত একটি ফেডারেল আদালত এই রায় দেন, যেখানে বিচারক জন ম্যাককনেল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। মূলত, ডেমোক্রেট-নিয়ন্ত্রিত ২০টি রাজ্য এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল।
আদালত তার রায়ে জানান, ফেডারেল সরকার পরিবহন খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সঙ্গে রাজ্যের অভিবাসন নীতির শর্ত যুক্ত করতে পারে না, কারণ কংগ্রেস এই বিষয়ে পরিবহন দপ্তরকে কোনো ক্ষমতা দেয়নি।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেওয়া এক বিচারকের মাধ্যমে এসেছে। এই রায়ের ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য এটি একটি বড় ধরনের আইনি ধাক্কা। এর আগে, বিভিন্ন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করার প্রচেষ্টা এবং শুল্ক নীতি বিষয়ক সিদ্ধান্ত।
বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে নীতিগত মতপার্থক্যের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ফেডারেল তহবিলকে চাপ হিসেবে ব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটের অংশগ্রহণের কারণে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের তহবিল বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও, ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের কারণে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান বন্ধ করারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিচারক ম্যাককনেল তার রায়ে উল্লেখ করেন, পরিবহন তহবিলের সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ক শর্ত জুড়ে দেওয়াটা “স্বেচ্ছাচারী এবং খেয়ালখুশি মতো”।
এছাড়াও, রাজ্যগুলো ফেডারেল সরকারের সঙ্গে কিভাবে অভিবাসন ইস্যুতে সহযোগিতা করবে, সে বিষয়েও কোনো সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়নি। মূলত, এই ধরনের সহযোগিতা ফেডারেল সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পরিবহন খাতের অর্থের বিনিময়ে হওয়ার কথা, যা রাজ্যগুলোর বাসিন্দাদের জন্য সড়ক, আকাশপথ এবং রেলপথে নিরাপদ ও কার্যকর পরিষেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বোন্টা আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের তহবিল ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের কাজ অনৈতিক এবং বেআইনি।
আমি আনন্দিত যে আদালতও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন এবং সংবিধান লঙ্ঘন করে রাজ্য ও স্থানীয় সরকারগুলোকে প্রভাবিত করার প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ প্রচেষ্টা রুখে দিয়েছেন।”
মামলা দায়েরকারী রাজ্যগুলোর মধ্যে ছিল ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, নিউ জার্সি, রোড আইল্যান্ড, মেরিল্যান্ড, কলোরাডো, কানেক্টিকাট, ডেলাওয়্যার, হাওয়াই, মেইন, ম্যাসাচুসেটস, মিশিগান, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ মেক্সিকো, নিউ ইয়র্ক, ওরেগন, ভার্মন্ট, ওয়াশিংটন এবং উইসকনসিন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন