ভাগ্য গণনার নানান পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম একটি হলো হাতের রেখা বিচার, যা বাংলাদেশে বেশ পরিচিত। অনেকে আবার রাশিফল বা ট্যারো কার্ডের মাধ্যমেও ভবিষ্যতের আভাস জানতে চান।
তবে, পশ্চিমা বিশ্বে প্রচলিত রয়েছে এক ভিন্ন ধরনের ভাগ্য গণনার পদ্ধতি – যা শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন। আর তা হলো পনির বা চিজের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বলার কৌশল, যা টাইরোম্যান্সি (Tyromancy) নামে পরিচিত।
টাইরোম্যান্সি মূলত এক ধরনের ভবিষ্যৎ বলার পদ্ধতি, যেখানে পনিরের আকার, গঠন এবং চিহ্নের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়। ধারণা করা হয়, এই পদ্ধতির প্রচলন দ্বিতীয় শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক ও ভবিষ্যৎ বক্তা আর্টেমিডোরুস অফ ডালডিস-এর সময় থেকে।
মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের কৃষকরা বিবাহ, সন্তান জন্ম এবং শস্য ফলনের মতো বিষয়গুলো জানতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। তারা পনিরের গায়ে নাম খোদাই করে তার মধ্যে সৃষ্ট নকশা ও রেখা বিচার করতেন।
বর্তমানে, এই টাইরোম্যান্সি চর্চা করেন এমন একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলেন শিকাগোর জেনিফার বিলক। তিনি “পনির ভবিষ্যৎ বক্তা” (Cheese Clairvoyant) হিসেবে পরিচিত। জেনিফার একজন ভ্রমণ বিষয়ক ও খাদ্য বিষয়ক সাংবাদিকও বটে।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তিনি টাইরোম্যান্সি শেখা শুরু করেন। শুধু তাই নয়, তিনি বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমেও ভবিষ্যৎ বলতে পারেন। এমনকি, স্নিয়ার্স (Snickers) নামক একটি কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে ২০২৩ সালের এনএফএল (NFL) সিজনের জন্য ভবিষ্যৎবাণীও করেছিলেন তিনি।
টাইরোম্যান্সি কীভাবে কাজ করে? জেনিফার বিলকের মতে, এই পদ্ধতিতে পনিরের টুকরোর আকার এবং তার ভেতরের বিভিন্ন চিহ্ন বিশ্লেষণ করা হয়। পনিরের প্রান্তগুলি কেমন দেখাচ্ছে, সেগুলোর মাধ্যমেও বিভিন্ন ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
একটি উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ যদি তার বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চান, তবে তাকে ক্যাম্বার্ট ব্রি (Camembert Brie) ধরনের পনির বেছে নিতে বলা হয়। অন্যদিকে, ভবিষ্যতের জন্য সুইস এমেন্টাল (Emmental Swiss) ধরনের পনির নির্বাচন করতে হয়।
সম্প্রতি, এই পদ্ধতিতে ভবিষ্যৎ জানার অভিজ্ঞতা হয়েছে এমন একজন ব্যক্তির বর্ণনায় জানা যায়, বিলক তার সম্পর্কের পরিবর্তন, আবেগের প্রকাশ, এমনকি “T” অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া নামের কারো সঙ্গে সমস্যা এবং গোপন কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিতে পেরেছিলেন। এই ভবিষ্যৎ বক্তা আরও জানান, ভবিষ্যতে ওই ব্যক্তির জীবনে ভালোবাসার আগমন ঘটতে পারে।
টাইরোম্যান্সি হয়তো আমাদের সংস্কৃতিতে সরাসরি পরিচিত নয়, তবে পশ্চিমা বিশ্বে এটি একটি আকর্ষণীয় চর্চা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি ভবিষ্যৎ জানার একটি ভিন্ন পদ্ধতি, যা পনিরের মাধ্যমে বিভিন্ন ঘটনার আভাস দেয়।
তথ্য সূত্র: পিপল