লস অ্যাঞ্জেলেস ডজর্স: অভিবাসন বিতর্কে নীরবতা, সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় বেসবল দল লস অ্যাঞ্জেলেস ডজর্স। দলটির রয়েছে বিশাল সংখ্যক হিস্পানিক সমর্থক, যারা দলটির সাফল্যের পেছনে সবসময় ছিলেন।
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির জেরে লস অ্যাঞ্জেলেসে ধরপাকড় শুরু হলে, ডজর্স কর্তৃপক্ষের নীরবতা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন সময়ে অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসন আইন আরও কঠোর করা হয়, যার ফলে বহু অভিবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসেও এর প্রভাব পড়েছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক হিস্পানিক সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন।
ঘটনার সূত্রপাত:
লস অ্যাঞ্জেলেসে যখন অভিবাসন বিরোধী অভিযান চলছিল, তখন ডজর্স কর্তৃপক্ষের নীরবতা অনেক সমর্থকের মনে আঘাত হানে।
সমর্থকরা মনে করেন, দলের এই বিষয়ে মুখ খোলা উচিত ছিল। কারণ, দলের সঙ্গে তাদের আবেগ জড়িত।
তারা সবসময় দলের পাশে ছিলেন, তাই তাদের সমর্থনে দলের এগিয়ে আসাটা স্বাভাবিক ছিল।
ফেডারেল এজেন্টের আগমন:
একদিন, ডজর্স স্টেডিয়ামের কাছে ফেডারেল এজেন্টদের উপস্থিতি নিয়ে খবর চাউর হয়।
এরপর সমর্থকরা স্টেডিয়ামের বাইরে এসে বিক্ষোভ করেন এবং “আইস আউট অফ লা” (ICE out of LA) স্লোগান দিতে থাকেন।
মূলত, এই ‘আইসিই’ (ICE) হলো যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট সংস্থা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, ডজর্স কর্তৃপক্ষ তাদের উদ্বেগের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে না।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য:
ডজর্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেডারেল এজেন্টদের স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, সীমান্ত সুরক্ষা বিষয়ক সংস্থা ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (CBP)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কর্মীরা সেখানে ছিলেন, তবে এর সঙ্গে ডজর্সের কোনো সম্পর্ক নেই।
সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া:
অনেক ডজর্স সমর্থক মনে করেন, দলের এই নীরবতা তাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
তাদের মতে, দলের উচিত ছিল অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা। এমনকি অনেক সমর্থক তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তারা এখন দলটিকে সমর্থন করবেন কিনা, সেই বিষয়ে সন্দিহান।
অভিবাসন বিতর্কের প্রেক্ষাপট:
লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
সেখানকার অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির কারণে অনেক পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ডজর্সের মতো একটি জনপ্রিয় দলের নীরবতা অনেককেই হতাশ করেছে।
বাংলাদেশের জন্য এর প্রাসঙ্গিকতা:
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি অভিবাসীও সেখানকার অভিবাসন নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যেও এই বিষয়ে ভীতি কাজ করে। লস অ্যাঞ্জেলেসের ঘটনা তাদের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ডজর্স কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ:
ডজর্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা অভিবাসন ইস্যুতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য একটি বিবৃতি দেবে।
তবে, অনেক সমর্থক মনে করেন, দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
তথ্যসূত্র: সিএনএন