সম্প্রতি, এক তরুণী মা তাঁর স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়েছেন। কারণ, তাঁর স্বামী তাঁদের তিন মাসের শিশুর ‘প্রথম আসল মা’ হিসেবে নিজের মাকে উল্লেখ করেছেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, ২৯ বছর বয়সী ওই তরুণী মা সন্তানের জন্মের পর কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। জন্মের সময় তাঁর শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়, যার ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হয়। এই সময়ে তাঁর শাশুড়ি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এবং সন্তানের দেখাশোনার কাজটিও তিনিই করছিলেন।
ওই মা জানিয়েছেন, শাশুড়ি সবসময়ই শিশুকে নিজের কাছে রাখতেন এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় তাঁকে নানা কথা শোনাতেন। এমনকি, তিনি নাকি এমনও বলেছিলেন, ‘আমার কাছে থাকলে মেয়েটা বেশি হাসে, তাই না?’
সম্প্রতি, ওই দম্পতি তাঁদের শিশুর ভিডিও দেখছিলেন। সেই সময়ই স্বামী তাঁর স্ত্রীকে বলেন, ‘আমার মা তো তখন (তুমি সুস্থ হওয়ার সময়) যেন ওর (শিশুর) প্রথম আসল মা ছিল!’
এই কথা শুনে মা-এর ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। তিনি স্বামীকে জানান, তাঁর এই কথা অত্যন্ত অপমানজনক লেগেছে। কারণ, তিনি কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে এসেছেন। উত্তরে স্বামী বিষয়টিকে ব্যক্তিগতভাবে না নিতে বলেন এবং তাঁর আচরণকে ডিফেন্সিভ আখ্যা দেন।
ঘটনার পরে স্বামী মন খারাপ করে রয়েছেন এবং শাশুড়িও পুত্রবধূকে ‘নাটকবাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ওই মা সামাজিক মাধ্যম রেডডিটে একটি পোস্ট করেন এবং তাঁর অনুভূতির কথা জানান। তিনি জানতে চান, তাঁর প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক ছিল নাকি তিনি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন?
পোস্টটির প্রতিক্রিয়ায় অনেকে ওই মায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, স্বামীর এমন মন্তব্য করাটা অত্যন্ত অসংবেদনশীল ছিল। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘কষ্টকর একটা জন্ম-পরবর্তী অভিজ্ঞতার পর এমন কথা শুনলে যে কেউ আঘাত পাবে। সেখানে আপনার স্বামী এমন কথা কীভাবে বলতে পারলেন?’
আলোচনা-সমালোচনার পাশাপাশি অনেকে স্বামীর মানসিকতার সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে, স্বামীর এখনই তাঁর মায়ের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। কারণ, মা-ই যদি সব করেন, তাহলে বাবার প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পারিবারিক কলহের মূল কারণ হলো সম্পর্কের ভুল বোঝাবুঝি। বিশেষ করে, মা হওয়ার পর একজন নারীর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে স্বামীর উচিত ছিল স্ত্রীর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাঁকে সমর্থন করা। এছাড়াও, শাশুড়িরও পুত্রবধূর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত ছিল।
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই তাঁদের মতামত জানিয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। অনেকে মনে করেন, মা-শাশুড়ির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং স্বামীর সমর্থন এই ধরনের পরিস্থিতি সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল