একটি ১৮ বছর বয়সী তরুণের অভিযোগ, তার বাবা-মা তাকে “পরীক্ষার জন্য নেওয়া শিশু” হিসেবে বিবেচনা করেছেন। বছরের পর বছর ধরে পরিবারে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়ে অবশেষে তিনি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ওই তরুণের ভাষ্যমতে, ছোটবেলা থেকে তার প্রতি পরিবারের অন্যদের থেকে ভিন্ন আচরণ করা হতো। বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সুযোগ কম ছিল, কিন্তু ছোট ভাইবোনদের ক্ষেত্রে নিয়মগুলো ছিল ভিন্ন। এমনকি খাবার টেবিলেও ছিল ভিন্ন আচরণ। তিনি যখন খাবার শেষ করতে পারতেন না, তখন তাকে জোর করে বসিয়ে রাখা হতো, যতক্ষণ না তিনি প্লেট সম্পূর্ণ খালি করেন।
কিন্তু তার ভাইবোনদের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যেত না। যখন তিনি এর কারণ জানতে চান, তখন বাবা-মা জানান, তিনি ছিলেন তাদের “প্র্যাকটিস কিড”।
শুধু তাই নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও তার ওপর ছিল অতিরিক্ত চাপ। ভালো ফল না করলে তাকে তিরস্কার করা হতো এবং শাস্তি পেতে হতো। অন্যদিকে, ভাইবোনদের খারাপ ফলের জন্য তেমন কোনো কথা শুনতে হতো না। তিনি জানান, তার বাবা-মা সবসময় বলতেন, ‘আমরা তোমার থেকে শিখেছি’।
পরিবারের এই দ্বৈত আচরণে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।
তরুণটির অভিযোগ, জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে উপহারের ক্ষেত্রেও তার সঙ্গে বৈষম্য করা হতো। এমনকি গ্রীষ্মকালে বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তার ওপর ছিল কঠোর নিয়ন্ত্রণ। যখন তিনি জানতে পারেন যে, তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য বাবা-মা কোনো সঞ্চয় করেননি, তখন তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর তিনি বাড়ি ছাড়েন এবং বাবা-মাকে তার graduation অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাননি। তিনি তার দাদা-দাদিকে আমন্ত্রণ জানান এবং তাদের সঙ্গেই থাকতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি তার বাবা-মাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি আর তাদের “প্র্যাকটিস কিড” হয়ে থাকতে চান না।
তিনি আরও বলেন, তার ভাইবোনদের সঙ্গে তারা যা খুশি করতে পারেন, কিন্তু তিনি আর তাদের এই খেলার পুতুল হতে রাজি নন।
ওই তরুণের এই সিদ্ধান্তের পর তার বাবা-মা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং তাকে নানা কথা শোনান। তবে তরুণ তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এই তরুণের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন। তাদের মতে, বাবা-মায়ের এমন আচরণ সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পরিবারের মধ্যে এমন বৈষম্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তথ্য সূত্র: পিপল