একটি মর্মান্তিক ঘটনার জেরে, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের এক দম্পতি, জেসিকা রস এবং ট্র্যাভিয়ন টেইলর সিনিয়র-কে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার (প্রায় ২২ কোটি টাকার বেশি, ১৮ই জুন, ২০২৪-এর বিনিময় হার অনুযায়ী) প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাদের সন্তানের মৃত্যুর পর, শিশুর ময়নাতদন্তের কিছু গ্রাফিক ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার অভিযোগে এক প্যাথলজিস্টের বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
জানা যায়, সন্তান জন্মদানের সময় শিশুটির মৃত্যু হয়, এবং পরে তার ময়নাতদন্ত করেন ড. জ্যাকসন গেটস নামক ওই প্যাথলজিস্ট। অভিযোগ, তিনি অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়াই শিশুর ময়নাতদন্তের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন, যা তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের শামিল। এই ঘটনার জেরে মানসিক distress-এর শিকার হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন ওই দম্পতি।
আদালতের রায়ে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ মিলিয়ন ডলার এবং অতিরিক্ত আড়াই লক্ষ ডলার জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ড. গেটসকে এবং তার প্রতিষ্ঠান মেডিকেল ডায়াগনস্টিক চয়েসেস-কে। আদালতের মতে, গেটসের এই কাজ ছিল অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অভিভাবকদের গভীর মানসিক আঘাত দিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ১০ই জুলাই, শিশুটির জন্ম হয় এবং জন্মের পরই তার মৃত্যু হয়। এর দুই দিন পর, আড়াই হাজার ডলারে ময়নাতদন্তের জন্য গেটসের সাথে চুক্তি করেন দম্পতি। এরপর, গেটস তাঁর সামাজিক মাধ্যমে শিশুর ময়নাতদন্তের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন।
ডাক্তার গেটস অবশ্য তার এই কাজের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই তিনি এই কাজ করেছেন। তবে, আদালত তাঁর এই যুক্তি গ্রহণ করেনি।
এদিকে, জেসিকা রস এই ঘটনার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালের বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে সন্তান জন্মদানের সময় চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য ময়নাতদন্ত করা হয়। এই ঘটনায়, ক্ল্যাটন কাউন্টি মেডিকেল পরীক্ষকের কার্যালয় শিশুটির মৃত্যুকে ‘নৃশংস হত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এই ঘটনার জেরে, শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতির বিরুদ্ধে জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপলস