খেলাধুলার জগতে ফ্র্যাঞ্চাইজির মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে: লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সের উদাহরণ।
খেলাধুলার জগতে দলগুলোর মালিকানা এখন বিনিয়োগের অন্যতম লাভজনক ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাস্কেটবল এবং আমেরিকান ফুটবলের দলগুলোর মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিপুল মুনাফা নিয়ে এসেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সের উদাহরণ এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
লেকার্সের উত্থান: কয়েক দশকের বিনিয়োগ।
১৯৭৯ সালে জেরি বাস যখন লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্স কিনেছিলেন, তখন দলটির দাম ছিল ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও কম। কিন্তু বর্তমানে দলটির বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অর্থাৎ, কয়েক দশকে দলটির মূল্য বেড়েছে ১০,০০০ শতাংশেরও বেশি। যদিও মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয় করলে এই বৃদ্ধি প্রায় ৪,০০০ শতাংশে দাঁড়ায়, যা এখনো একটি বিশাল অংক।
বাসের মালিকানায় দলটি ১১টি এনবিএ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে, যা তাদের এই আকাশচুম্বী মূল্যে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে।
এনবিএ এবং এনএফএল: মূল্যবৃদ্ধির নেতৃত্ব।
শুধু লেকার্সই নয়, ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (এনবিএ) এবং ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল)-এর দলগুলোর গড় মূল্যও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৯৯৫ সালে যেখানে একটি এনবিএ দলের গড় মূল্য ছিল ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামান্য বেশি, সেখানে বর্তমানে এটি প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
একই সময়ে, এনএফএল দলগুলোর গড় মূল্যও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ১৯৯৫ সালে দলগুলোর গড় মূল্য ছিল ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও কম, যা বর্তমানে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
এই হিসেবে, দলগুলোর মূল্য প্রায় ৪,০০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিডিয়া স্বত্ব এবং এর প্রভাব।
এই বিশাল মূল্যবৃদ্ধির পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো টেলিভিশন এবং অন্যান্য মাধ্যমে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ আয়। এনবিএ এবং এনএফএল উভয় লীগই তাদের মিডিয়া স্বত্ব বিক্রি করে বিশাল অঙ্কের অর্থ উপার্জন করে।
খেলা সম্প্রচারের অধিকারের জন্য কোম্পানিগুলো এখন কয়েকশ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ডালাস কাউবয়স দলের বাজার মূল্য ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতা।
বিশ্বের ক্রীড়া জগতের এই প্রবণতা বাংলাদেশের জন্য কিছু সম্ভাবনা নিয়ে আসে। যদিও বাংলাদেশে এখনো পেশাদার ক্রীড়া লিগের ধারণা সেভাবে গড়ে ওঠেনি, তবে খেলাধুলার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।
ভবিষ্যতে স্থানীয় পর্যায়ে ভালো বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ক্রীড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি তৈরি করা গেলে তা লাভজনক হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন