জাম্বিয়ার ফুটবল দল: এক ট্র্যাজেডি, ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।
১৯৯৩ সাল। জাম্বিয়ার জাতীয় ফুটবল দল তখন আফ্রিকার ফুটবলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিতে প্রস্তুত। খেলোয়াড়দের চোখে ছিল বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন, সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে ছিল উন্মাদনা।
সেই স্বপ্নপূরণের পথে, নিয়তি যেন অন্য কিছুই লিখে রেখেছিল।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের উদ্দেশ্যে সেনেগালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময় এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন জাম্বিয়ার জাতীয় দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়। আটলান্টিক মহাসাগরে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে দলের ১৮ জন খেলোয়াড়সহ বিমানের সকল যাত্রী নিহত হন।
পুরো জাতি শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিল।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে জানা যায়, বিমানের একটি ইঞ্জিনে আগুন লেগেছিল এবং পাইলট ভুল করে অন্য ইঞ্জিন বন্ধ করে দেন, যার ফলে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাগরে পড়ে যায়।
বেঁচে যাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন কালুশা view Bwalya। সেই সময় তিনি নেদারল্যান্ডসের একটি ক্লাবে খেলতেন।
এই দুর্ঘটনার পর পুরো দেশ যখন শোকের সাগরে নিমজ্জিত, তখন ফুটবল ফেডারেশন ভেঙে পড়া দলটিকে পুনরায় গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। কালুশা view Bwalya-কে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং তিনি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এরপর শুরু হয় নতুন খেলোয়াড় বাছাইয়ের পালা।
নতুন দল খুব দ্রুতই তৈরি হয় এবং ঘটনার মাত্র ১০ সপ্তাহ পরেই তারা মরক্কোর বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়লাভ করে। যদিও তারা ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, কিন্তু তাদের লড়াই ছিল প্রশংসার যোগ্য।
একই বছর তারা আফ্রিকা কাপ অফ নেশন্সের (আফকন) ফাইনালে পৌঁছেছিল, যেখানে তারা নাইজেরিয়ার কাছে পরাজিত হয়।
এরপর কেটে যায় দীর্ঘ ১৮ বছর। ২০১২ সালে, জাম্বিয়া দল আবার আলোচনায় আসে। সেবার আফকন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গ্যাবোনে, যেখানে সেই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।
ফাইনালে তারা আইভরি কোস্টকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো আফকন চ্যাম্পিয়ন হয়। যেন নিয়তিই তাদের এই জয় এনে দিয়েছিল।
বর্তমানে, জাম্বিয়ার দল আবারও একটি বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখছে। তারা এখন ২০২৩ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাদের সামনে সুযোগ রয়েছে, এবং সম্ভবত এবারও নিয়তি তাদের সহায় হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন