পুরুষ ও তাঁর সঙ্গিনীর মধ্যে ঘর ভাড়ার খরচ ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদ, আলোচনা অনলাইনে।
ঢাকার এক যুবক, যিনি তাঁর ঠাকুরদার বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকেন, তাঁর সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌথ খরচের হিসাব নিয়ে মতবিরোধে জড়িয়েছেন। বিষয়টি এখন অনলাইন জগতে আলোচনার বিষয়। জানা গেছে, ওই যুবক যদি তাঁর সঙ্গিনীকে তাঁর সাথে থাকতে দেন, সেক্ষেত্রে খরচের ভাগাভাগি কীভাবে হবে, তা নিয়েই যত বিপত্তি।
২৮ বছর বয়সী ওই যুবক জানান, তিনি বেশ ভালো রোজগার করেন। তাঁর সঙ্গিনী বর্তমানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন এবং সামান্য বৃত্তি ও ছাত্র ঋণের উপর নির্ভরশীল।
ওই যুবকের কথায়, “আমার সঙ্গিনী আমার সঙ্গে থাকতে চায়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে তিনি তাঁর ঠাকুরদার বাড়িতে থাকেন এবং ঠাকুরদার ইচ্ছায় কোনো ভাড়া দেন না।
অন্যদিকে, তাঁর সঙ্গিনী জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের সঙ্গে লড়াই করছেন।
তাঁর বর্তমান ভাড়াই প্রায় পুরো বৃত্তির টাকা খেয়ে ফেলে, এছাড়াও রয়েছে ইউটিলিটি বিল, খাবার খরচ, চিকিৎসা বীমা, গাড়ির কিস্তি এবং অন্যান্য ঋণ।
আবাসনের মালিক ভাড়া বাড়ানোর কথা বলায় তাঁর সমস্যা আরও বেড়েছে। তাছাড়া, তাঁর ও তাঁর পোষা কুকুরের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী আবাস খুঁজে বের করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই তিনি তাঁর সঙ্গীর সঙ্গে থাকতে চান।
বর্তমানে ওই যুবক তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন।
বন্ধুটি ভাড়ার পরিবর্তে সমস্ত ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করে। সঙ্গিনী তাঁর সঙ্গে থাকতে চাইলে বন্ধুটিকে ঘর ছাড়তে হবে, এবং বন্ধু এতে রাজিও আছে।
সমস্যার মূল কারণ হল আর্থিক বিষয়গুলো কীভাবে দেখা হবে।
ওই যুবক জানিয়েছেন, “আমি আমার সঙ্গিনীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং বলেছি যে, সে যদি আমার সঙ্গে থাকতে আসে, তাহলে আমরা যৌথ বিল এবং অন্যান্য খরচ সমানভাবে ভাগ করে নেব।
কিন্তু তাঁর সঙ্গিনী এতে রাজি নন।
তিনি চান, আয়ের আনুপাতিক হারে খরচ ভাগ করা হোক।
যুবক জানান, আনুপাতিক হারে খরচ ভাগ করলে মূলত তিনিই সমস্ত খরচ বহন করবেন।
যদিও ৫০-৫০ হারে খরচ ভাগাভাগি করলে তাঁর সঙ্গিনীর পক্ষে তা বহন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বর্তমানে, তাঁর জীবনযাত্রার খরচ তাঁর বৃত্তির থেকে অনেক বেশি।
এই পরিস্থিতিতে, যদি ৫০-৫০ হারে খরচ ভাগ হয়, তাহলে তাঁর খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কম হবে।
এমনকি তাঁর নিজেরও খরচ বাড়বে, কারণ তিনি বর্তমানে কোনো ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেন না।
এই বিষয়ে সঙ্গিনীর যুক্তি, তিনি যেহেতু ভালো রোজগার করেন, তাই তাঁরই বেশি খরচ দেওয়া উচিত।
ওই যুবক তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থেকে সঙ্গিনীকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “যদি সে আনুপাতিক হারে খরচ ভাগ করার বিষয়ে জোর দেয়, তাহলে একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয়।
এতে সঙ্গিনী হতাশ এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, ওই যুবক জানতে চান, তিনি কি যুক্তিসঙ্গত নন?
নাকি সঙ্গিনীর এই প্রস্তাব ন্যায্য?
এই বিষয়ে তিনি একটি অনলাইন ফোরামে (Reddit) পরামর্শ চেয়েছেন।
সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
একজন মন্তব্য করেছেন, “আপনি কি এই নারীকে আপনার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী হিসেবে দেখছেন? যদি তাই হয়, তবে পড়াশোনার সময় তাঁকে সাহায্য করা আপনাদের দুজনের জন্যই ভালো হবে।
অন্যান্যরা খরচের ভাগাভাগির বিষয়ে বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন এবং বিশেষ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেছেন।
আরেকজন লিখেছেন, “আমি সাধারণত আয়ের আনুপাতিক হারে খরচ ভাগ করার পক্ষে।
তবে যেহেতু তাঁর কোনো ভাড়া দিতে হচ্ছে না, এবং আপনি তাঁর জন্য একটি ভালো প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাই আমার মনে হয়, এখানে ৫০-৫০ ভাগাভাগি করাটাই সঠিক।
তথ্যসূত্র: পিপলস