মুখের ব্যায়াম বা ‘ফেস যোগা’ এখন বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে এর চর্চা বাড়ছে। ত্বক টানটান করা, মুখের রেখা কমানো, এমনকী চেহারায় অন্যরকম একটা উজ্জ্বলতা আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এই ব্যায়ামগুলো পরিচিতি লাভ করেছে।
তবে সত্যিই কি ফেস যোগা কাজ করে? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চলুন।
আসলে, ফেস যোগা হল মুখের পেশীগুলোর জন্য বিশেষ কিছু ব্যায়ামের সমষ্টি। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গি এবং পুনরাবৃত্তিমূলক মুভমেন্ট, যা মুখের মাংসপেশিগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে মুখের চামড়া টানটান হয় এবং বয়সের ছাপ ধীরে ধীরে কমে আসে।
নিউ ইয়র্ক-এর একজন ডার্মাটোলজিস্ট, ড. আনেটা রেজকো-র মতে, মুখের ত্বক, ফ্যাট এবং মাংসপেশীর স্তর থাকে। সময়ের সাথে সাথে, বিশেষ করে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বা বোটক্স-এর মতো চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে এই মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
ফলে মুখের ত্বক ঝুলে যেতে শুরু করে। ফেস যোগা এই মাংসপেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, যা মুখের গঠনকে উন্নত করতে পারে।
চিকিৎসক এবং গবেষক ড. মুরাদ আলম একটি গবেষণায় ফেস যোগার কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছেন। তাঁর গবেষণা অনুযায়ী, যারা নিয়মিতভাবে, অর্থাৎ প্রায় ২০ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩০ মিনিটের জন্য ফেস যোগা করেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকের মুখমণ্ডলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
বিশেষ করে গালের মাংসপেশিগুলো আগের চেয়ে সুগঠিত হয়েছে। তবে, ড. আলম মনে করেন, এই ব্যায়াম কসমেটিক চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না, কারণ এর ফলাফল সীমিত।
অন্যদিকে, ফেস যোগা প্রশিক্ষক অ্যানেলিস হাগেন মনে করেন, ফেস যোগা শুধু ব্যায়াম নয়, বরং মুখের প্রতি মনোযোগী হওয়ার একটি উপায়। তাঁর মতে, এটি আমাদের মুখের অভিব্যক্তি সম্পর্কে সচেতন হতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
তিনি ক্লাসে মুখমণ্ডলের বিভিন্ন ভঙ্গি অনুশীলন করান, যা মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
ফেস যোগার উপকারিতা অনেক। এটি মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। এছাড়া, এটি মুখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে, যা ঘুমের পরে অনেকের হয়ে থাকে।
তবে, অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে বা ভুল পদ্ধতিতে করলে চোখের নিচের ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, কারণ এই অঞ্চলের ত্বক খুব সংবেদনশীল।
সুতরাং, ফেস যোগা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, এটি কসমেটিক চিকিৎসার মতো তাৎক্ষণিক ফলাফল নাও দিতে পারে। তাই, এটি শুরু করার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন