মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা, ৩০ বছর বয়সী হেইলি ফোক, অনলাইনে তার বহুগামী সম্পর্কের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। বহুগামীতা (polyamory) ধারণাটি অনেকের কাছেই অপরিচিত হতে পারে, তবে এটি এমন একটি সম্পর্ক যেখানে একাধিক ব্যক্তির মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে এবং সকলে এতে সম্মতি দেন।
হেইলি তার ব্যক্তিগত জীবন এবং এই ধরনের সম্পর্ক নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলেন, যা অনেকের কাছে আগ্রহের বিষয়।
হেইলির প্রথম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় তিনি একাকীত্ব অনুভব করতেন। পরবর্তীতে তিনি নতুন করে সম্পর্ক শুরু করেন এবং সেখানে তিনি তার বর্তমান স্বামীর সঙ্গে বহুগামীতার ধারণা নিয়ে আলোচনা করেন।
এই সম্পর্কের শুরু থেকেই তারা একে অপরের প্রতি সৎ ছিলেন এবং নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করতেন।
হেইলি জানান, বহুগামী সম্পর্কে আবদ্ধ থাকা মানে এই নয় যে আপনি প্রতারণা করছেন। বরং, এর মূল ভিত্তি হলো, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা।
তিনি বলেন, “নৈতিকভাবে বহুগামী হওয়া মানে হলো, একসঙ্গে একাধিক মানুষকে ভালোবাসতে পারা।” তিনি আরও যোগ করেন, “বহুগামী হলেও একজন ব্যক্তি একগামী সম্পর্কের মতোই থাকতে পারেন।
সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৎ থাকার মানসিকতাই এখানে প্রধান।
তাদের সম্পর্কের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, যা তারা দুজনেই মেনে চলেন। যেমন – অন্য কারও সঙ্গে ডেটিংয়ের আগে এবং পরে একে অপরের সঙ্গে কথা বলা, নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া ইত্যাদি।
হেইলি মনে করেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মান এবং ভালো বোঝাপড়া খুবই জরুরি।
তবে, হেইলি এই ধরনের জীবনধারা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমাজের কিছু সমালোচনা ও নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হন।
তিনি বলেন, “অন্যদের কাছ থেকে আসা এই ধরনের মন্তব্যগুলো আমার জন্য বেশ কঠিন ছিল।”
এই বিষয়ে হেইলির মূল উদ্দেশ্য হলো, যারা এই ধরনের সম্পর্ক নিয়ে আগ্রহী, তাদের সাহায্য করা।
তিনি চান, এই ধরনের সম্পর্ক নিয়ে সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে এবং যারা একাকীত্বে ভুগছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে।
হেইলি মনে করেন, সবারই নিজস্ব জীবন বেছে নেওয়ার অধিকার আছে।
হেইলি ফোক আরও মনে করেন, যদি কোনো দম্পতি তাদের চিরাচরিত সম্পর্ককে নতুন দিকে মোড় দিতে চান, তবে তাদের কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে আলোচনা শুরু করা, একসঙ্গে ডেটিং প্রোফাইল তৈরি করা এবং প্রতিটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা অপরিহার্য।
তিনি পরামর্শ দেন, কোনো অভিজ্ঞ কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, যিনি এই ধরনের সম্পর্কগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন।
হেইলির মতে, সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, “আমি আমার সঙ্গীর কাছ থেকে কোনো কিছু লুকাই না।
আমি আমার ভালোবাসার মানুষটির কাছে নিজের সবটুকু প্রকাশ করতে পারি।”
তথ্য সূত্র: পিপল