শিক্ষিকার আক্ষেপ: ভালো বেতনের চাকরি বেছে নিতে না পারার জন্য অভিভাবকদের দায়ী করা
অধিকাংশ মানুষের জীবনে কর্মজীবনের শুরুটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অভিভাবকদের পরামর্শ ও সমর্থন এক্ষেত্রে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
সম্প্রতি, এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা উঠেছে যেখানে একজন শিক্ষক তাঁর কর্মজীবন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং এর জন্য অভিভাবকদের দায়ী করেছেন।
যুক্তরাজ্যের একটি অনলাইন ফোরাম, যা অনেকটা আমাদের দেশের অনলাইন আলোচনা গ্রুপের মত, ‘মামসনেট’-এ নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ওই শিক্ষক জানান, ভালো বেতনের চাকরির গুরুত্ব সম্পর্কে ছোটবেলায় তাঁর অভিভাবকদের কাছ থেকে তেমন কোনো ধারণা তিনি পাননি।
তিনি মনে করেন, অভিভাবকদের উচিত ছিল শুরুতে সন্তানদের ভালো বেতনের চাকরির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলা।
তাঁর ভাষায়, “আমি এখন একজন শিক্ষক এবং আগে মোটামুটি ভালো জীবন যাপন করতাম। ছুটিতে যাওয়া বা টুকটাক শখের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল। কিন্তু এখন জীবনটা আগের মতো নেই, অনেকেরই হয়তো নেই।”
শিক্ষিকা আরও জানান, তিনি কোনো রকম বস্তুবাদী মানুষ নন, কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকার গুরুত্বটা তিনি অনুভব করতে পারছেন।
তাই এখন তাঁর মনে হয়, অন্য কোনো পেশা বেছে নিলে ভালো হতো।
তিনি তাঁর এই অনুভূতির কথা প্রকাশ করে জানতে চান, এই বিষয়ে আর কারও একইরকম মনে হয় কি না।
সেই সঙ্গে তিনি জানতে চান, এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে কথা বলেন কি না।
আলোচনাটিতে অন্যান্য ব্যবহারকারীরাও তাঁদের মতামত প্রকাশ করেন।
তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ শিক্ষিকার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেড়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় বেতন বাড়েনি।
আবার অনেকে মনে করেন, অভিভাবকদের দায়ী করাটা ঠিক নয়, বরং এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির নিজেরই নেওয়া উচিত ছিল।
তাঁদের মতে, ভালোবাসার চাকরি বেছে নেওয়ার পরামর্শটা সবসময় সঠিক নয়, যদি না সেই চাকরি থেকে ভালো উপার্জন করা যায়।
আলোচনাটিতে উঠে আসা এই বিষয়গুলো আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটেও বেশ প্রাসঙ্গিক।
বর্তমান সময়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, সেই তুলনায় অনেকের উপার্জন সেভাবে বাড়ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে, একটি ভালো আয়ের পেশা নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অভিভাবকদেরও এক্ষেত্রে সন্তানদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া উচিত, যাতে তারা ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কারণ, একটি উপযুক্ত পেশা নির্বাচন করা কেবল আর্থিক নিরাপত্তা দেয় না, বরং জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেয়।
তথ্যসূত্র: পিপল