শিরোনাম: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বন্দী শিবিরে শিশুদের দুর্দশা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে অভিবাসী পরিবারগুলোকে বন্দী করে রাখার শিবিরগুলোতে শিশুদের প্রতি চরম অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে সেখানকার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ডিলেই ও কার্নেস এলাকার বন্দী শিবিরগুলোতে বিশুদ্ধ পানির অভাব, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবার অনুপস্থিতি এবং শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে খাবার পানি নিয়ে শিশুদের সঙ্গে ঝগড়া এমনকি মারামারির ঘটনাও ঘটছে।
উদ্বাস্তু শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো জানিয়েছে, সেখানকার শিশুরা মারাত্মক মানসিক আঘাতের শিকার হচ্ছে। সেখানকার একটি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে একজন মা জানিয়েছেন, তার তিন বছরের ছেলে বন্দী হওয়ার পর থেকে সবসময় মেঝেতে গড়াগড়ি করে এবং খাবার খেতে চায় না।
জানা গেছে, অভিবাসী পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ‘ফ্লোরেস সেটেলমেন্ট এগ্রিমেন্ট’ নামে একটি চুক্তির অধীনে কাজ করে। এই চুক্তিতে শিশুদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি বাতিল করার চেষ্টা করছে এবং বন্দীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখার পরিকল্পনা করছে, যা শিশুদের জন্য আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, বন্দী শিবিরগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ রাখা হচ্ছে। এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠছে। অনেক পরিবার গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে।
শিশুদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত এক শিশুর চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দপ্তর (ICE) জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ জনকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করছে। এই পরিস্থিতিতে বন্দী শিবিরের সংখ্যা ও সেখানে থাকা মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই পরিস্থিতিতে অভিবাসন সংক্রান্ত নীতিগুলোতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সরকার যদি ফ্লোরেস চুক্তি বাতিল করে, তাহলে শিশুদের অধিকার আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।
এই প্রতিবেদনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।