চীনের একটি হোটেলে অতিথি আপ্যায়নের অভিনব কায়দা সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। চীনের চংকিং শহরের কাছে অবস্থিত লেহে লেদু লিয়াংজিয়াং হলিডে হোটেল, যা ‘লাল পান্ডা-থিমযুক্ত ছুটি’র জন্য পরিচিত, সেখানকার অতিথিদের ঘুম ভাঙানোর জন্য বিপন্ন প্রজাতির লাল পান্ডা ব্যবহারের অভিযোগে পড়েছে।
খবর অনুযায়ী, হোটেল কর্তৃপক্ষ অতিথিদের ঘরে লাল পান্ডা নিয়ে যেত, যা নিয়ে প্রাণী অধিকার কর্মীরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন।
হোটেলটি তাদের এই কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল, বিশেষ করে ভ্রমণ বিষয়ক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তবে, সমালোচকদের মতে, এটি একটি চরম অমানবিক কাজ, কারণ লাল পান্ডা একটি বিপন্ন প্রজাতি এবং তাদের এই ধরনের ব্যবহার তাদের জীবনযাত্রার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (WWF) জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে ১০ হাজারের কম লাল পান্ডা টিকে আছে।
আবাসস্থল ধ্বংস, চোরা শিকার এবং অন্যান্য পশুর ফাঁদে আটকা পড়ার কারণে এদের সংখ্যা দ্রুত কমছে।
বিষয়টি সামনে আসার পর স্থানীয় বন বিভাগ সক্রিয় হয় এবং হোটেলটিকে লাল পান্ডাদের সঙ্গে অতিথিদের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি অনুযায়ী, এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে এবং জরিমানা হতে পারে।
সাধারণত, লাল পান্ডারা দেখতে অনেকটা বিড়ালের মতো, এদের শরীর লাল রঙের এবং মুখ ও লেজে কালো-সাদা চিহ্ন থাকে।
এরা আসলে ভালুক বা পান্ডার প্রজাতিভুক্ত নয়। হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পর্যটনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি এই ঘটনার মাধ্যমে নতুন করে সামনে এসেছে।
প্রাণী অধিকার এবং পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্বের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল