ভূমধ্যসাগরের গভীরে নিমজ্জিত বিলাসবহুল ‘বেয়েশিয়ান’ ইয়টটিকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে ভয়াবহ ঝড়ে সাত জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। ইতালির উপকূল থেকে প্রায় দশ মাস পর, গত ২১ জুন শনিবার এটিকে জল থেকে সম্পূর্ণভাবে তোলা হয়।
এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ প্রযুক্তি ব্যবসায়ী মাইক লিনচ এবং তার মেয়ে হান্নাহ লিনচসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
টিএমসি মেরিন নামক একটি ব্রিটিশ কোম্পানির তত্ত্বাবধানে উদ্ধার অভিযানটি চালানো হয়। গভীর সমুদ্র থেকে ইয়টটি উদ্ধারের কাজটি ছিল অত্যন্ত জটিল।
প্রথমে ইয়টের ৭২ মিটার লম্বা মাস্তুলটি খুলে ফেলা হয়। এরপর বিশেষ ক্রেন ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে এটিকে ধীরে ধীরে খাড়া করার চেষ্টা করা হয়। অবশেষে, কয়েক দিন ধরে চলা এই কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইয়টটিকে জলের উপরিভাগে আনা সম্ভব হয়।
২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট, এক ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়ে ‘বেয়েশিয়ান’ ডুবে যায়। ইতালীয় কোস্ট গার্ডের ভাষ্যমতে, তীব্র ঝড়ের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ইয়টটিতে তখন মোট ২২ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও সাত জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্রযুক্তি ব্যবসায়ী মাইক লিনচ, তার মেয়ে হান্নাহ, এবং আরও কয়েকজন।
এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। যুক্তরাজ্যের মেরিন অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, খারাপ আবহাওয়া এবং তীব্র বাতাস ইয়ট ডুবির মূল কারণ ছিল।
একইসঙ্গে, ইয়টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণে কোনো ত্রুটি ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, ইতালির প্রসিকিউটররা একটি ফৌজদারি তদন্তও করছেন।
ইয়টের কর্মী এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো গাফিলতি ছিল কিনা, সে বিষয়েও তারা অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
এই ঘটনার পর, ইয়টের ক্যাপ্টেন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং অন্যান্য কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও নৌ-দুর্ঘটনার অভিযোগ আনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
তথ্য সূত্র: পিপল