ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ: মূল ব্যক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যা “অপারেশন মিডনাইট হ্যামার” নামে পরিচিত।
এই অভিযানের প্রধান কেন্দ্র ছিল ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান পেটে হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন-এর ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
পেন্টাগনের ব্রিফিং রুমে রবিবার সকালে এই দুই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এই অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
হেগসেথ ছিলেন এই অভিযানের প্রধান মুখপাত্র, যিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন এবং এই অভিযানকে “অভূতপূর্ব সাফল্য” হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি জানান, এই অভিযানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে “ধ্বংস” করা হয়েছে।
অন্যদিকে, জেনারেল কেইন সামরিক পোশাকে সুচিন্তিত এবং বিস্তারিত তথ্য পেশ করেন।
তিনি এই আক্রমণের সময়রেখা তুলে ধরেন এবং সতর্কতার সঙ্গে বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তাই এখনই এর ওপর মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
এই ঘটনার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
হেগসেথ, যিনি একসময় ফক্স নিউজের উপস্থাপক ছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে, জেনারেল কেইন ছিলেন একজন বিচক্ষণ উপদেষ্টা, যিনি পর্দার আড়ালে থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতেন।
ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কেইন-এর ভূমিকা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এই অভিযানের পরিকল্পনা করার সময়, ট্রাম্প কয়েকজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টার উপর নির্ভর করেছিলেন।
তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেনারেল মাইকেল ক্যুরিলা, যিনি ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান, সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
তবে, হেগসেথের ভূমিকা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে ভিন্নমত ছিল।
তিনি সাধারণত বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়েskeptical ছিলেন।
তবে, ক্যুরিলার পরামর্শকে তিনি গুরুত্ব দিতেন।
এছাড়াও, হেগসেথের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ছিল যে তিনি কর্মকর্তাদের খুশি করতে বেশি সচেষ্ট ছিলেন।
হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা হেগসেথকে এই অভিযানের “গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করলেও, হেগসেথ এই আক্রমণের পক্ষে ছিলেন।
আক্রমণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার জন্য তিনি সরাসরি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এই অভিযানের সাফল্যের পর, হেগসেথকে ট্রাম্পের পাশে দেখা যায়।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ছবিতেও তাঁর উপস্থিতি ছিল।
এই ঘটনার মাধ্যমে হেগসেথের ভাবমূর্তির পরিবর্তন হয়, কারণ এর আগে তিনি একটি বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সেই ঘটনার কারণে তাঁর কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
তবে, এই অভিযানে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সেই বিতর্ক কিছুটা হলেও কমেছে।
এই সামরিক অভিযানের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: CNN