ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো “সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস” করা হয়েছে।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, হামলায় ইসফাহানে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়, যেখানে ইরানের প্রায় ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ রয়েছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করা হয়নি।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ইসফাহানে অবস্থিত এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় আঘাত হানতে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুর মতো, বি-২ বোমারু বিমান থেকে এই স্থাপনায় “বাঙ্কার-বাস্টার” বোমা ফেলা হয়নি।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি সত্যিই ফোর্ডোতে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটি ধ্বংস করা গিয়েও থাকে, তবুও ইসফাহানের স্থাপনার অসম্পূর্ণ ধ্বংসের কারণে ট্রাম্পের ঘোষিত লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, ইসফাহানে এখনো ইরানের বিপুল পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসফাহানের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলো এতটাই গভীর যে, সেখানে বাঙ্কার-বাস্টার বোমাও সম্ভবত পুরো ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। এমনকি হামলার আগে কিছু মার্কিন কর্মকর্তা এই গভীর সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত বোমার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তারা খুব শীঘ্রই ইরানের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করবেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, যাতে ইরান আর অস্ত্র তৈরির উপযুক্ত ইউরেনিয়াম তৈরি করতে না পারে।
এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, ইরান ইসফাহানে নতুন একটি পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র তৈরি করছে। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই এটি চালু করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইরানের হাতে এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপাদান ও সক্ষমতা রয়েছে। তাদের কাছে এখনো এমন একটি বৃহৎ ভূগর্ভস্থ কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে তারা তাদের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। কারণ, ইসফাহানের স্থাপনা যদি অক্ষত থাকে, তাহলে ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা এখনো বিদ্যমান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন