বাংলার অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ: হরমুজ প্রণালীর উত্তেজনা এবং তেলের বাজারে অস্থিরতা।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এর মূল কারণ হলো হরমুজ প্রণালীর আশেপাশে তৈরি হওয়া উত্তেজনা। পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মাঝে অবস্থিত এই সংকীর্ণ জলপথটি বিশ্বের তেল বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি ইরান এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেকার ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ করা হয়, যা বৈশ্বিক চাহিদার প্রায় এক পঞ্চমাংশ। এই পথ বন্ধ হয়ে গেলে, বিশ্বজুড়ে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। বিশ্লেষকদের মতে, এমনটা ঘটলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। এর ফলে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হবে।
ইরান এই জলপথের উত্তর অংশের নিয়ন্ত্রণ করে। দেশটির পক্ষ থেকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে, যা উদ্বেগকে আরও বাড়িয়েছে। ইরানের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা এমনটা করতে পারে।
তেলের দাম বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। যেহেতু বাংলাদেশ তেল এবং গ্যাসের জন্য আমদানি নির্ভর, তাই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের পরিবহন খরচ, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাবে। যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এরই মধ্যে তাদের তেল সরবরাহ ব্যবস্থা বিভিন্ন পথে বিস্তৃত করেছে। বাংলাদেশেরও উচিত হবে, সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া এবং বিকল্প ব্যবস্থাগুলো সক্রিয় রাখা। আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা কমাতে এবং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা