পুর্তো রিকোর রন্ধনশৈলী: সংস্কৃতির এক অপূর্ব মিশ্রণ।
পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের একটি অংশ, পুর্তো রিকো, শুধু মনোরম সমুদ্র সৈকত আর ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত নয়, বরং তাদের খাদ্য সংস্কৃতির জন্যও পরিচিত। খাদ্যরসিকদের জন্য এই স্থানটি যেন এক স্বর্গরাজ্য। এখানে রয়েছে বিভিন্ন সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক চমৎকার মিশ্রণ, যা তাদের খাদ্যকে দিয়েছে এক বিশেষ স্বাদ।
পুর্তো রিকোর একটি জনপ্রিয় খাবার হলো ‘মোফঙ্গো’। এটি তৈরি করা হয় ভাজা কাঁচকলা দিয়ে। কাঁচকলা সেদ্ধ করে ভর্তা তৈরি করা হয়, এরপর এর সাথে মেশানো হয় রসুন এবং অন্যান্য মশলা। এটি পরিবেশন করা হয় মাংস অথবা সামুদ্রিক খাবারের সাথে। এই খাবারটি পুর্তো রিকোর আদিবাসী, স্প্যানিশ এবং আফ্রিকান সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
পুর্তো রিকোর খাদ্য সংস্কৃতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কফি। দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত ‘হ্যাকিয়েন্ডা ট্রেস অ্যাঞ্জেলস’ নামের একটি কফি বাগান, যা স্থানীয় কফি চাষের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এখানে কফি চাষের ঐতিহ্যকে ধরে রাখা হয়েছে এবং একই সাথে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বাগানের কফি বিনস-এর স্বাদ সত্যিই অসাধারণ।
শুধু খাদ্যই নয়, এখানকার স্থানীয় খামারিরাও তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনার জন্য পরিচিত। ‘ফ্রুটোস ডেল গুয়াকাবো’ তেমনই একটি খামার। তারা ঘূর্ণিঝড় মারিয়ার ধ্বংসযজ্ঞের পর, কৃষিকাজে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের ফুল এবং স্থানীয় ফল ব্যবহার করে খাদ্য তৈরি করে, যা তাদের সৃজনশীলতার পরিচয় বহন করে।
পুর্তো রিকোর উপকূলীয় অঞ্চলের খাবারও খুব জনপ্রিয়। ‘এল বুরেন দে লুলা’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট-এ পরিবেশন করা হয় স্থানীয় নানান পদ। এখানকার ‘আরিপাস’ এবং ‘এমপানাডাস দে জুয়েয়েস’-এর মতো খাবারগুলো পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়। এখানকার পরিবেশ আর রান্নার স্বাদ, উভয়ই ভোজনরসিকদের মন জয় করে।
পুর্তো রিকোর খাদ্য সংস্কৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখানে খাবারের প্রতিটি পদে মিশে আছে বিভিন্ন সংস্কৃতির ছোঁয়া। এই দ্বীপের মানুষের খাদ্যপ্রেম, তাদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই, যারা নতুনত্বের স্বাদ নিতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য পুর্তো রিকো হতে পারে একটি আদর্শ গন্তব্য।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।