আকাশে এক ঝলমলে আলোর খেলা, যা ‘নর্দার্ন লাইটস’ বা ‘অরোরা বোরিয়ালিস’ নামে পরিচিত, প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এই আলোচ্ছটা মেরু অঞ্চলের আকাশে প্রায়ই দেখা যায়, যা সৌর ঝড় এবং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের মিথস্ক্রিয়ার ফল।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) -এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই আলোকচ্ছটা কয়েক দিনের জন্য দৃশ্যমান হতে পারে।
আসলে, ‘নর্দার্ন লাইটস’ তৈরি হয় সূর্যের কণা এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কণার মধ্যে সংঘর্ষের কারণে। যখন সূর্যের শক্তিশালী কণাগুলো পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা আকৃষ্ট হয়, তখন তারা বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় কণাগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়।
এই মিলনের ফলে আলো তৈরি হয়, যা সবুজ, নীল, বেগুনি বা আরও নানা রঙের হতে পারে। এই আলোর খেলা রাতের আকাশে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে।
NOAA -এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার জানাচ্ছে যে, ২৩ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ‘নর্দার্ন লাইটস’-এর দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় সৌর কার্যকলাপ সামান্য বাড়তে পারে, যার ফলে আলোর তীব্রতা মাঝারি হতে পারে।
আলোর তীব্রতা মাপা হয় Kp স্কেলে, যা ০ থেকে ৯ পর্যন্ত বিস্তৃত। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই সময়ে Kp-এর মান ৪ পর্যন্ত হতে পারে।
যদিও ‘নর্দার্ন লাইটস’ সাধারণত উত্তর মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলে দেখা যায়, তবে মাঝে মাঝে এটি আরও দক্ষিণেও দৃশ্যমান হতে পারে। এই আলোকচ্ছটা ভালোভাবে দেখার জন্য শহর বা জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে, রাতের অন্ধকারে যেতে হয়।
কারণ শহরের আলো এই সুন্দর দৃশ্যকে ম্লান করে দিতে পারে।
এই ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা আমাদের প্রকৃতির বিশালতা এবং এর রহস্য সম্পর্কে আরও জানতে উৎসাহিত করে। যদিও ‘নর্দার্ন লাইটস’ বাংলাদেশ থেকে দেখা সম্ভব নয়, তবে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে অবগত হওয়া আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে।
ভবিষ্যতে, যারা এই দৃশ্য স্বচক্ষে দেখার সুযোগ পান, তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। রাতের আকাশে তারাভরা দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করার মতো, এই আলোকচ্ছটা ছবি তোলার ক্ষেত্রেও কিছু বিশেষ টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: