ইউরোপের চারটি জনপ্রিয় গন্তব্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভ্রমণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ অসুস্থ হয়েছেন এবং নয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ায় হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, এমনটাই জানা গেছে।
ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (ECDC) জানিয়েছে, এই দেশগুলোতে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ২,০৯৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
হেপাটাইটিস এ একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগ যা লিভারকে আক্রমণ করে।
এই ভাইরাস মূলত সংক্রমিত ব্যক্তির মল থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে, যা খাবারের মাধ্যমে বা অপরিষ্কার হাতে খাবার প্রস্তুত করার কারণে ছড়াতে পারে।
দূষিত জল বা কাঁচা শামুক-ঝিনুক খেলেও এই রোগ হতে পারে।
ভাইরাসটি সহজে মরে না এবং কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় থাকতে পারে।
স্লোভাকিয়া, যেখানে হ্রদের ধারে অনেক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে ইতিমধ্যে ৮৮০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
হাঙ্গেরিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩০, যাদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক।
অস্ট্রিয়ায় ৮৭ জন আক্রান্ত হলেও, মৃতের সংখ্যা ৩।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা চেক প্রজাতন্ত্রে, যেখানে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ECDC জানাচ্ছে, শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে।
জার্মানির পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগের কারণ না হলেও, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়ার আক্রান্তদের সাথে সম্পর্কযুক্ত ৩ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
ECDC-এর মতে, এই রোগটি মূলত একই সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে বা একই ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিছন্নতার অভাব, মাদক গ্রহণ এবং আশ্রয়হীন মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।
চেক প্রজাতন্ত্রের স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. বারবোরা মাকোভা এই পরিস্থিতিতে ছুটির আগে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
হেপাটাইটিস এ-এর প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—জন্ডিস (ত্বক ও চোখের সাদা অংশে হলদে ভাব), পেটের ডান দিকে ব্যথা, গাঢ় প্রস্রাব, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, জ্বর এবং ক্লান্তি।
যদি কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন, তবে লক্ষণ দেখা দেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে টিকা নিলে রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
ভ্রমণকালে পরিষ্কার পরিছন্নতা বজায় রাখা এবং খাবার ও জলের বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপলস