শিরোনাম: ফ্যাশন জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র: ভার্জিল অ্যাবলো-র জীবন ও কীর্তি
ঢাকা, [আজকের তারিখ]। ফ্যাশন দুনিয়ায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম ভার্জিল অ্যাবলো। যিনি ছিলেন ফ্যাশন জগতের একজন প্রভাবশালী শিল্পী এবং ডিজাইনার।
সম্প্রতি, পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লেখক রবিন গিভন তাঁর নতুন বই “মেক ইট আওয়ার্স: ক্র্যাশিং দ্য গেটস অফ কালচার উইথ ভার্জিল অ্যাবলো” -এর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এই কিংবদন্তীর জীবন ও কর্মের নানা দিক।
ভার্জিল অ্যাবলো, যিনি ছিলেন লুই ভুইটনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ পোশাক বিভাগের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, অল্প বয়সেই ফ্যাশন জগতে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন। তাঁর ডিজাইন করা পোশাক, জুতা এবং অন্যান্য সামগ্রী ফ্যাশনপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
অ্যাবলো’র কাজ শুধু পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি ছিলেন একজন শিল্পী, স্থপতি, ডিজে এবং ডিজাইনার। তাঁর বহুমাত্রিক প্রতিভা ফ্যাশনকে নতুন রূপে পরিচয় করিয়েছিল।
রবিন গিভনের বইয়ে অ্যাবলোর শৈশব, শিক্ষাজীবন এবং কানয়ে ওয়েস্টের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ঘানার অভিবাসী পরিবারে জন্ম নেওয়া অ্যাবলোর বেড়ে ওঠা ছিল ইলিনয়ের রকফোর্ডে।
স্থাপত্যবিদ্যার ছাত্র থাকাকালীন কানয়ে ওয়েস্টের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং তাঁদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়। এই বন্ধুত্ব অ্যাবলোর কর্মজীবনে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। কানয়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা অ্যাবলোকে ফ্যাশন জগতে আরও পরিচিত করে তোলে।
অ্যাবলোর ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘অফ-হোয়াইট’ (Off-White) -এর উত্থান ফ্যাশন বিশ্বে এক নতুন ধারার জন্ম দেয়। সাদা তির্যক রেখা, কোটেশন চিহ্ন এবং লাল জিপ টাই-এর মতো বৈশিষ্ট্যগুলো অফ-হোয়াইটের ডিজাইনকে বিশেষভাবে পরিচিত করে তোলে।
তাঁর ডিজাইন করা পোশাকগুলো তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন সচেতন মানুষের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। নাইকির সঙ্গে তাঁর collaboration ছিলো আরও একটি উল্লেখযোগ্য কাজ। যেখানে তিনি নাইকির বিখ্যাত কিছু জুতাকে নতুন রূপে ডিজাইন করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অ্যাবলো তাঁর ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতেন। তিনি তাঁর ডিজাইন এবং ফ্যাশন ভাবনাগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেন, যা তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে। তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ‘হypebeast’ নামে ডাকত এবং তাঁর ফ্যাশন শো-গুলোতে উপচে পড়া ভিড় করত।
রবিন গিভন তাঁর বইয়ে ফ্যাশন জগতের বাইরেও অ্যাবলোর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে অ্যাবলোর কাজ সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
গিভন মনে করেন, অ্যাবলোর ফ্যাশন শুধু পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি নতুন চিন্তাভাবনা এবং শৈলীর প্রকাশ।
ভার্জিল অ্যাবলো ২০২১ সালে মাত্র ৪১ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর অকাল প্রয়াণ ফ্যাশন জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
তবে, তাঁর কাজ আজও ফ্যাশনপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। তাঁর ডিজাইন করা পোশাক, তাঁর ভাবনা এবং তাঁর সৃষ্টিশীলতা সবসময় মানুষের মাঝে অনুপ্রেরণা যোগায়।
রবিন গিভনের এই বইটি ভার্জিল অ্যাবলোর জীবন ও কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা ফ্যাশন, সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর তাঁর প্রভাব সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস