ইরানে মার্কিন বিমান হামলার জেরে সেখানকার পরিস্থিতি এখন বেশ উত্তপ্ত। এই পরিস্থিতিতে, দুই ভিন্ন মতের ইরানি-আমেরিকান নাগরিকের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে।
তাঁদের একজন, রুজবেহ ফারাখানিপুর, যিনি একসময় ইরানের শাসকগোষ্ঠীর কট্টর সমালোচক ছিলেন, তিনি এই হামলার বিরোধীতা করছেন।
অন্যদিকে, এলহাম ইয়াঘোবিয়ান, যিনি একসময় ইরানের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, এই হামলার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
ফারাখানিপুর একসময় ইরানের রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার হয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। ২০০০ সালে তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি প্রাণের ভয়ে ইরান ছাড়েন।
বর্তমানে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি রেস্টুরেন্ট চালান। তাঁর মতে, এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপের ফলে আফগানিস্তান বা ইরাকের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা কারো কাম্য নয়।
অন্যদিকে এলহাম ইয়াঘোবিয়ান মনে করেন, এই হামলা ইরানের জন্য উপকারী। তিনি বিশ্বাস করেন, এর মাধ্যমে ইরানের বর্তমান শাসনের অবসান হতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরে আসতে পারে।
“আলোচনা বা নমনীয়তা এই যুদ্ধের সমাধান নয়। একমাত্র শাসকদের অপসারণের মাধ্যমেই শান্তি ও সমৃদ্ধি আনা সম্ভব।”
লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় ১ লক্ষ ৪১ হাজার ইরানি-আমেরিকান বাস করেন। তাঁদের মধ্যে এই ইস্যুতে মতভেদ দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিবাদে স্থানীয় সময় রবিবার (বাংলাদেশ সময় সোমবার) “ওয়েস্টউড”-এ ফেডারেল বিল্ডিংয়ের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা “নো ওয়ার অন ইরান” এবং “যুদ্ধ চাই না” –এর মতো প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
ফারাখানিপুর মনে করেন, এই ধরনের হামলা ইরানের জনগণের কোনো উপকার করবে না। তাঁর মতে, ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের জন্য সেখানকার জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
ইরানে মার্কিন বিমান হামলার পর থেকে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইরানি-আমেরিকান কমিউনিটিতেও।
অন্যদিকে যেমন অনেকে এই হামলার বিরোধিতা করছেন, তেমনই অনেকে একে সমর্থন করছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায়, সেখানকার মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন