ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে অবশেষে যুদ্ধবিরতি!
মধ্যপ্রাচ্যে যেন হঠাৎ করেই যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল। গত কয়েক দিনে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সোমবার (স্থানীয় সময়) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তিনি উভয় দেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে অভিনন্দন জানাতে চাই, তাদের ধৈর্য, সাহস এবং বুদ্ধিমত্তার জন্য। তারা ১২ দিনের যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে।”
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র কাতার-এ অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানে। যদিও কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতার কারণে সেখানে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, প্রথমে ইরান ইসরায়েলের ওপর হামলা বন্ধ করবে এবং এর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও ইরানের বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণ বন্ধ করবে। তবে, এই চুক্তির সময়সীমা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের সঙ্গে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে আলোচনা চালিয়ে যান তিনি। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল-থানির মধ্যস্থতায় ইরান এই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
যদিও যুদ্ধবিরতি কত দিন স্থায়ী হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কিছু সময় পরেই ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হানে, যাতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়।
এই সংঘাতের মূল কারণ ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। ইসরায়েল মনে করে, ইরান খুব দ্রুত পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি চলে এসেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের কিছু স্থাপনায় আঘাত হানে।
অন্যদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত এখনো চলছে। গত অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫৫,০০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সেখানকার প্রায় ২১ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। যুদ্ধবিরতির এই আলোচনায় গাজার পরিস্থিতিও অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
গাজায় আটকে পড়া জিম্মিদের পরিবারের একটি সংগঠন এই যুদ্ধবিরতিকে গাজাতেও প্রসারিত করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। তারা বলেছে, “যারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি করতে পারে, তারা অবশ্যই গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে।” ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদও একই মত প্রকাশ করে বলেছেন, “এবার গাজার পালা। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধ বন্ধ করার এটাই উপযুক্ত সময়।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন