যুক্তরাজ্যে টিকটক-এর মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দেশটির তথ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ। তথ্য কমিশনারের কার্যালয় (Information Commissioner’s Office – ICO) জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমগুলো শিশুদের অনলাইন কার্যকলাপ থেকে পাওয়া ডেটা ব্যবহার করে তাদের সুপারিশের অ্যালগরিদম তৈরি করে থাকে। এর ফলে অল্পবয়সীরা অনুপযুক্ত বা ক্ষতিকর কন্টেন্ট দেখতে পারে। এই বিষয়গুলো নিয়েই মূলত তাদের উদ্বেগ।
আইসিও’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে টিকটকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা নির্ভরযোগ্য, সেটি তারা নিশ্চিত করতে চায়। তথ্য কমিশনার জন এডওয়ার্ডস বলেছেন, “ডেটা সংগ্রহ এবং তার ব্যবহারের ধরন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমি আশা করি, তাদের সুপারিশের সিস্টেমে শিশুদের ডেটার ইতিবাচক এবং উপকারী ব্যবহার রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার উদ্বেগের বিষয় হলো, ডিভাইস বা প্ল্যাটফর্মে আসক্তিমূলক কার্যকলাপ অথবা ক্ষতিকর কন্টেন্ট থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে টিকটক-এর ব্যবস্থাগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী কিনা। এছাড়া, অন্য কোনো স্বাস্থ্যহানিকর বিষয় থেকে তাদের বাঁচানো যাচ্ছে কিনা, সেটাও দেখা হচ্ছে।”
তদন্তের অংশ হিসেবে, অনলাইন ফোরাম সাইট রেডডিট (Reddit) এবং ছবি শেয়ারিং সাইট ইমগুর-ও (Imgur) শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে ব্যবহার করে এবং তাদের বয়স যাচাই বা নির্ধারণের পদ্ধতিগুলো কেমন, তা খতিয়ে দেখা হবে।
টিকটক-এর মালিক চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স (ByteDance)। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “টিকটকে তরুণদের জন্য একটি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের সুপারিশ ব্যবস্থা এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং কাজ করে, যা কিশোর-কিশোরীদের গোপনতা ও সুরক্ষার জন্য কঠোর এবং ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে, শিল্প-নেতৃত্বের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য এবং তাদের ফিডে থাকা কন্টেন্টের উপর কঠোর বিধিনিষেধ।”
এর আগে, ২০২৩ সালে শিশুদের ডেটা-এর ভুল ব্যবহারের জন্য টিকটকের উপর ১ কোটি ২৭ লক্ষ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৭১ কোটি টাকা) জরিমানা করা হয়েছিল। এছাড়া, ২০২০ সালে প্ল্যাটফর্মের নিয়ম ভেঙে ১৩ বছরের কম বয়সী প্রায় ১৪ লক্ষ শিশুকে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দেওয়ার অভিযোগও ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস