ট্যানার মার্টিন: ক্যান্সারের সঙ্গে পাঁচ বছরের লড়াই শেষে ৩০ বছর বয়সে জীবনাবসান।
সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ ট্যানার মার্টিন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে কোলন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছিলেন, অবশেষে ৩০ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী, শেই রাইট।
ট্যানার তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলো কিভাবে কাটিয়েছেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
ট্যানার মার্টিনের কোলন ক্যান্সার ধরা পড়েছিল ২৫ বছর বয়সে, ২০২০ সালের নভেম্বরে। এরপর থেকে, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী শেই, তাঁদের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেন। এই দম্পতির জীবনযাত্রা, তাঁদের সাহস, এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে জেতার মানসিকতা অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।
ট্যানারের মৃত্যুর খবরটি তাঁর স্ত্রী, শেই, গত ২৬শে জুন, একটি আবেগপূর্ণ পোস্টে জানান। তিনি তাঁর স্বামীর একটি প্রি-রেকর্ডেড ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে ট্যানার নিজেই তাঁর মৃত্যুর ঘোষণা করেন।
ভিডিওটিতে তিনি তাঁর জীবনের ভালো মুহূর্তগুলো স্মরণ করেন, ভবিষ্যতের প্রতি তাঁর আগ্রহের কথা জানান এবং তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ট্যানার তাঁর মৃত্যুর আগে একটি বিশেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি তাঁর পরিবার ও মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সাহায্য চেয়ে একটি ‘গোফান্ডমি’ (GoFundMe) প্রচারাভিযান শুরু করার কথা বলেন।
ট্যানার এবং শেইয়ের পরিবারে নতুন অতিথি আসার মাত্র ৪১ দিন পরেই এই শোকের ছায়া নেমে আসে। গত ১৫ই মে, তাঁদের কোল আলো করে আসে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান।
ট্যানারের ক্যান্সার নির্ণয়ের পর, তিনি সবসময়ই তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ক খুঁটিনাটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তাঁর চিকিৎসার প্রতিটি পদক্ষেপ, কেমোথেরাপির ধকল—সবকিছুই তিনি অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতেন।
এমনকি, তাঁর কন্যার জন্মের আগে, তিনি তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন এবং সকলের কাছে দোয়া চেয়েছিলেন।
চিকিৎসকরা ২০১৯ সালে ট্যানারকে জানিয়েছিলেন যে তাঁর ক্যান্সার আর নিরাময়যোগ্য নয় এবং তাঁর আয়ু ২ থেকে ৫ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই কঠিন সত্য জানার পরেও, তিনি জীবনকে ভালোবাসতে ভোলেননি।
বরং, প্রতিটি দিনকে উপভোগ করেছেন, সকলের সঙ্গে হাসি-আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁর এই মানসিকতা অনেকের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ট্যানারের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর অগণিত অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষী। তাঁর জীবন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই এবং তাঁর ইতিবাচক মানসিকতা, সকলকে আলো দেখিয়ে গেছে।
এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ এবং এর প্রতিরোধ ও সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল