“মিকি ১৭”: বং জুন-হো’র নতুন ছবিতে মৃত্যুর মিছিল, তবে কি টিকে থাকা সম্ভব?
বং জুন-হো, যিনি “প্যারাসাইট”-এর মতো মাস্টারপিস উপহার দিয়েছেন, তাঁর নতুন ছবি “মিকি ১৭”-এর ঘোষণা আসার পর থেকেই সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবার্ট প্যাটিনসন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এই ছবির রিভিউ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সিনেপ্রেমীদের মধ্যে। ছবিতে মৃত্যুর এক ভিন্ন স্বাদ নিয়ে এসেছেন পরিচালক।
“মিকি ১৭”-এর গল্পে দেখা যায়, ২০২৩ সালের প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের একটি কল্পিত জগৎ, যেখানে মানুষ অন্য গ্রহে উপনিবেশ গড়ার চেষ্টা করছে। এই মিশনে “এক্সপেন্ডেবল” নামে পরিচিত একদল মানুষকে পাঠানো হয়, যাদের কাজ হলো—বারবার মৃত্যুবরণ করা! তাদের শরীর “রিপ্রিন্ট” করার প্রযুক্তি রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা আবার নতুন জীবন পায়। রবার্ট প্যাটিনসন এই ছবিতে মিকি নামের এক “এক্সপেন্ডেবল”-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি বারবার মরেন, আবার ফিরে আসেন। বং জুন-হোর এই ছবিতে সাই-ফাই এবং থ্রিলারের মিশ্রণ রয়েছে, যা দর্শকদের ভিন্ন এক জগতে নিয়ে যায়।
ছবিতে দেখা যায়, মিকিকে পাঠানো হয়েছে “নিলফহেইম” নামক একটি গ্রহে। সেখানে তার কাজ—বিভিন্ন বিপদজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া। শুরুতে হয়তো বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হতে পারে, তবে যত সময় যায়, ততই গল্পের গভীরতা বাড়ে। মিকির চরিত্রে প্যাটিনসনের অভিনয় মুগ্ধ করার মতো। একদিকে যেমন তিনি নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য লড়ছেন, তেমনই ভালোবাসার সম্পর্কও ফুটিয়ে তুলেছেন। সিনেমায় মার্ক র্যাফালো, টনি কোলেট, নাওমি একি এবং আনা মারিয়া ভারটোলোমি’র মতো অভিনেতাদেরও দেখা গেছে।
ছবিটির প্রথম অংশে গল্প বলার ধরন বেশ আকর্ষণীয়। তবে সমালোচকদের মতে, ছবির শেষের দিকে গল্পের গতি কিছুটা কমে যায়। অনেক ঘটনার ঘনঘটা এবং অপ্রয়োজনীয় দৃশ্যের কারণে কিছু দর্শক হতাশ হতে পারেন। ছবিতে পরিচালক বং জুন-হো “মিকি সেভেন” নামের একটি উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তবে গল্পের চিত্রনাট্যে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা দর্শকদের ভিন্ন কিছু উপহার দেয়।
সবকিছু বিবেচনা করে, “মিকি ১৭” একটি সাহসী প্রচেষ্টা, যেখানে বং জুন-হো দর্শকদের জন্য মৃত্যুর এক নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছেন। রবার্ট প্যাটিনসনের অভিনয় এবং ছবির কিছু দৃশ্যের নির্মাণশৈলী প্রশংসার যোগ্য। যারা ভিন্ন ধরনের সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ছবিটি উপভোগ্য হতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস