যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা আরও সুসংহত করতে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশটির ইউটাহ রাজ্য অ্যাপ স্টোরগুলোতে ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই এবং শিশুদের অ্যাপ ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনুমতি বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি আইন পাস করেছে।
বুধবার এই সংক্রান্ত একটি বিল রাজ্যের গভর্নর স্পেন্সর কক্সের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে তিনি দ্রুতই এতে স্বাক্ষর করবেন।
নতুন এই আইনের ফলে, গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপলের মতো অ্যাপ স্টোরগুলোকে ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই করতে হবে।
কোনো ব্যবহারকারী যদি নাবালক হয়, তাহলে অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে তাদের অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে।
এই বিলটি নিয়ে মেটা, যারা ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোর মালিক, এবং অ্যাপ স্টোর প্রস্তুতকারক, যেমন- অ্যাপল ও গুগলের মধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
মেটা এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো মনে করে, শিশুদের জন্য তাদের পণ্যগুলোকে নিরাপদ রাখতে অ্যাপ স্টোরগুলোর ওপর এই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
তাদের যুক্তি, অ্যাপ স্টোরগুলো ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই করার ক্ষেত্রে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
অন্যদিকে, অ্যাপ স্টোরগুলোর বক্তব্য হলো, ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই করার কাজটি অ্যাপ নির্মাতাদের পক্ষেই ভালো হয়।
অ্যাপল কর্তৃপক্ষের মতে, অ্যাপ স্টোরগুলোতে বয়স যাচাইয়ের বাধ্যবাধকতা তৈরি হলে ব্যবহারকারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড বা সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বরের মতো ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হতে পারে।
উচ্চ প্রযুক্তির অনেক কোম্পানি, যেমন- অ্যাপল ও গুগল, “চেম্বার অফ প্রোগ্রেস” নামক একটি প্রযুক্তি নীতি বিষয়ক গ্রুপের মাধ্যমে ইউটাহ রাজ্যের আইনপ্রণেতাদের কাছে এই বিলটি প্রত্যাখ্যান করার জন্য তদবির করেছিল।
এমনকি, গত বছর অ্যাপল লুইজিয়ানাতেও একই ধরনের একটি বিল বাতিল করতে সহায়তা করেছিল।
ইউটা রাজ্যের এই পদক্ষেপের ফলে, এখন থেকে যদি কোনো শিশু অ্যাপ ডাউনলোড করতে চায়, তাহলে প্রথমে তার অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে।
এছাড়া, যদি কোনো অ্যাপে অভ্যন্তরীণ কেনাকাটার সুযোগ থাকে বা ব্যবহারের শর্তাবলীতে সম্মতি দিতে হয়, সেক্ষেত্রেও অভিভাবকের অনুমোদন লাগবে।
তবে, এই আইনের কারণে অনেক প্রযুক্তি কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এই ধরনের পদক্ষেপ শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বিধানে কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে।
বর্তমানে আরও আটটি রাজ্যে একই ধরনের বিল বিবেচনা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস