আমার পছন্দের সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘ইউ হ্যাভ গট মেইল’ (You’ve Got Mail) এখনো অন্যতম। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি ভালোবাসা, সম্পর্ক এবং প্রযুক্তির পরিবর্তনের গল্প বলে। মেঘ রায়ান এবং টম হ্যাঙ্কস অভিনীত এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন নোর এফ্রন।
সিনেমাটির মূল গল্প দুটি ভিন্ন ধারার বইয়ের দোকানের মালিককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ক্যাথলিন কেলি, যিনি মায়ের ছোট একটি শিশুদের বইয়ের দোকান চালান, আর জো ফক্স, যিনি একটি বিশাল কর্পোরেট বইয়ের দোকানের উত্তরাধিকারী। তারা একে অপরের প্রতিযোগী, কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে এক অন্যরকম সম্পর্ক।
নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে, যখন ইন্টারনেট তখনও এত সহজলভ্য ছিল না, তখন ইমেইল আদান-প্রদান ছিল যোগাযোগের এক নতুন মাধ্যম। ‘ইউ হ্যাভ গট মেইল’ সেই সময়ের মানুষের মধ্যে অনলাইনে সম্পর্কের ধারণা ফুটিয়ে তোলে। ঢাকার প্রেক্ষাপটে যদি চিন্তা করি, তবে সম্ভবত একুশ শতকের শুরুতে, যখন মানুষজন ধীরে ধীরে ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করেছিল, তখন এই সিনেমার গল্পটা অনেকের কাছেই নতুনত্বের স্বাদ এনেছিল।
সিনেমাটি ভালোবাসার গভীরতা এবং সম্পর্কের জটিলতা দারুণভাবে তুলে ধরেছে। ক্যাথলিন এবং জো-এর মধ্যেকার কথোপকথনগুলো খুবই আকর্ষণীয়। তারা একে অপরের সঙ্গে ইমেইলের মাধ্যমে তাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করে। এই বিষয়গুলো দর্শকদের হৃদয়ে নাড়া দেয়।
অবশ্য, সিনেমার কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। জো-এর আচরণ অনেক সময় কিছুটা রহস্যজনক মনে হয়। সে ক্যাথলিনের সঙ্গে তার পরিচয় গোপন করে এবং তার ব্যবসার ক্ষতি করে। তবে, নোর এফ্রনের দক্ষ পরিচালনা এবং টম হ্যাঙ্কস ও মেগ রায়ানের অসাধারণ অভিনয় এই দুর্বলতাগুলো অনেকখানি ঢেকে দেয়।
সিনেমাটি শুধু ভালোবাসার গল্প বলে না, বরং পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার একটি সুন্দর উদাহরণও তৈরি করে। ক্যাথলিন তার মায়ের দোকান টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করে, যেখানে জো-এর কর্পোরেট জগৎ সবসময় ব্যবসার প্রসারের দিকে মনোযোগী। এই দুই ধরনের মানসিকতার দ্বন্দ্ব দর্শকদের নতুন কিছু ভাবতে শেখায়।
‘ইউ হ্যাভ গট মেইল’ এখনো আমার কাছে একটি বিশেষ সিনেমা, যা আমাকে ভালোবাসার গভীরতা এবং সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়।
তথ্য সূত্র: The Guardian