মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারের কার্যকারিতা বিষয়ক একটি নতুন উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। এই ধরনের পদক্ষেপ সরকারি কার্যক্রমের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়া স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। এর ফলে, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিশেষ করে, সরকারি দপ্তরগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব দেখা দিতে পারে।
এই প্রসঙ্গে, ‘পার্টনারশিপ ফর পাবলিক সার্ভিস’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যাক্স স্টিয়ার বলেন, “সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ অনেকটা জনগণের সম্পদ ধ্বংস করার মতো। সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মেধার পরিবর্তে রাজনৈতিক আনুগত্যের বিষয়টি গুরুত্ব পেলে তা দুর্নীতি ও অযোগ্যতা বাড়াতে পারে।”
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, একসময় যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্পয়লস সিস্টেম’ প্রচলিত ছিল। অর্থাৎ, নির্বাচনে জয়ী দলের সদস্যরা সরকারি চাকরিগুলো নিজেদের লোক দিয়ে পূরণ করত। এর ফলস্বরূপ, ব্যাপক দুর্নীতি ও অদক্ষতা দেখা দেয়। এমনকি, ১৮৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ডকে হত্যা করা হয়, যিনি একজন অসন্তুষ্ট চাকরিপ্রার্থীর হাতে নিহত হন। এরপর থেকে, একটি অরাজনৈতিক ও মেধা-ভিত্তিক সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
তবে, বর্তমানে এই ব্যবস্থার দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। যদিও সরকার পরিবর্তনের ফলে সরকারি কর্মপরিবেশে কিছু পরিবর্তন আসতেই পারে, কিন্তু কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, কর্মীদের ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে বিভিন্ন ‘বৈচিত্র্য কর্মসূচি’ বাতিলের কথা বলা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের কোনো যৌক্তিক কারণ দর্শানো হচ্ছে না। এমনকি, এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্যও প্রকাশ করা হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে জনগণের ক্ষতি হতে পারে। কারণ, এর ফলে সরকারি দপ্তরগুলোতে অদক্ষতা বাড়বে এবং জনগণের করের টাকা অপচয় হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন