ইউক্রেন তাদের সামরিক শক্তি আরও বাড়াতে ফাস্ট-পার্সন ভিউ (FPV) ড্রোন-এর ভাণ্ডার বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটি আগামী বছর প্রায় ৪৫ লক্ষ FPV ড্রোন কিনতে চায়। সোমবার ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা এই উদ্দেশ্যে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করবে।
ড্রোন প্রযুক্তি: যুদ্ধের মোড় ঘোরানোর হাতিয়ার
বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ড্রোন যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হয়ে উঠেছে, তা বিভিন্ন সময়ে প্রমাণ হয়েছে। FPV ড্রোনগুলো তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। যুদ্ধের ময়দানে এগুলো ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। একজন সামরিক বিশেষজ্ঞের মতে, ১০০০ ডলারেরও কম দামের FPV ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার কয়েক কোটি ডলার মূল্যের ট্যাংক ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে।
সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে ইউক্রেনের পদক্ষেপ
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে তারা ১৫ লক্ষেরও বেশি ড্রোন কিনেছে, যার ৯৬ শতাংশই তৈরি করেছে ইউক্রেনের স্থানীয় প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারীরা। তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালে এই সংখ্যা আরও বাড়বে, কারণ দেশের প্রতিরক্ষা শিল্প প্রায় ৪৫ লক্ষ FPV ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হবে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এই ড্রোনগুলো কেনার পরিকল্পনা করছে।
পশ্চিমাদের উপর নির্ভরতা কমাতে চায় ইউক্রেন
রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার আগে ইউক্রেন তাদের মিত্রদের কাছ থেকে জোরালো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছে। একইসঙ্গে, তারা নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে, যাতে পশ্চিমা দেশগুলোর উপর তাদের নির্ভরতা কমানো যায়। ইউক্রেন সরকার এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা দীর্ঘ পাল্লার ড্রোন তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। গত তিন বছর ধরে তারা তাদের প্রয়োজনীয় অধিকাংশ ড্রোন দেশেই তৈরি করছে এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীতে সরবরাহ করা মনুষ্যবিহীন বিমান বা UAV-এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ছে
ইউক্রেনের সেনা কর্মকর্তা ওলেক্সান্ডার সিরস্কি জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসের তুলনায় গত মাসে তাদের ড্রোনগুলো ২২ শতাংশ বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, রাশিয়ার বাহিনীও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। সিরস্কি বলেন, “প্রযুক্তিগত যুদ্ধের ময়দানে আমাদের নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে শক্তিশালী হতে হবে এবং এক্ষেত্রে শত্রুর চেয়ে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই।”
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।