সেলিন ডিওন, বিশ্বজুড়ে কোটি ভক্তের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া একজন জনপ্রিয় শিল্পী।
সম্প্রতি, এই খ্যাতিমান শিল্পী তাঁর ভক্তদের জন্য একটি সতর্কবার্তা দিয়েছেন, যা এখন ইন্টারনেটে আলোচনার বিষয়।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কণ্ঠ ও নামের অপব্যবহার করে কিছু ‘নকল’ বা ‘ভুয়া’ গান তৈরি করা হচ্ছে, যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
ডিওন তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, “অনুগ্রহ করে জেনে রাখুন, এই গানগুলো সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট এবং আমার অনুমোদিত নয়। এগুলো আমার অফিসিয়াল গানের তালিকাভুক্তও নয়।”
এআই প্রযুক্তি এখন সংগীত জগতে এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
কণ্ঠ নকল করা থেকে শুরু করে গানের সুর তৈরি করা পর্যন্ত, এআই-এর অপব্যবহার নিয়ে শিল্পী এবং প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে বিতর্ক বাড়ছে।
শুধু সেলিন ডিওনই নন, বিলি আইলিশ, কেটি পেরি, জে বালভিন, জোনাস ব্রাদার্স, এবং মিরাান্ডা ল্যামবার্টের মতো আরও অনেক শিল্পী এই বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন।
এপ্রিল ২০২৪-এ, দুই শতাধিক শিল্পী একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে এআই-এর মাধ্যমে শিল্পীদের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন।
আর্টিস্ট রাইটস অ্যালায়েন্স নামক একটি অলাভজনক সংস্থার উদ্যোগে এই চিঠিটি তৈরি করা হয়েছিল।
চিঠিতে এআই নির্মাতা, প্রযুক্তি কোম্পানি, প্ল্যাটফর্ম এবং ডিজিটাল মিউজিক সার্ভিস প্রদানকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যেন তারা এআই ব্যবহার করে শিল্পীদের অধিকার লঙ্ঘন করা থেকে বিরত থাকে।
বিশেষ করে, গভীর জাল (deepfake) এবং কণ্ঠস্বর ক্লোনিংয়ের মতো বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছিল, যা শিল্পীদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
সেলিন ডিওন এর আগে এক বিরল স্নায়বিক রোগ ‘স্টিফ পার্সন সিন্ড্রোম’ (Stiff Person Syndrome বা এসপিএস)-এর কারণে দীর্ঘদিন সঙ্গীত জগৎ থেকে দূরে ছিলেন।
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং খিঁচুনির মতো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন।
তিনি সম্প্রতি প্যারিস অলিম্পিকে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশনার মাধ্যমে আবারও সবার নজর কেড়েছেন।
এআই প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের এই যুগে, সেলিন ডিওনের সতর্কবার্তা শুধু তাঁর ভক্তদের জন্যই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে শিল্পী এবং সঙ্গীত প্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
কারণ, প্রযুক্তির অপব্যবহার যেকোনো সময় আমাদের প্রিয় শিল্পীদের কণ্ঠ এবং কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ভবিষ্যতে, এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেই দিকে এখন সবার নজর।
তথ্য সূত্র: সিএনএন