যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, সৌদি আরবে শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাশিয়া সোমবার রাতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, শহরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। রাজধানী ও আশেপাশের এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। একইসাথে, মঙ্গলবার ভোরে মস্কোতে ড্রোন হামলা চালানো হয়, যা সম্ভবত রাশিয়ার রাজধানী শহরের উপর চালানো সবচেয়ে বড় হামলা। এতে অন্তত একজন নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েক জায়গায় আগুন লেগেছে। হামলার কারণে ফ্লাইট ও ট্রেনের চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে। মস্কো অঞ্চলের গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোব্যভ বলেছেন, হামলায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। এর আগে নভেম্বরে মস্কোতে চালানো ড্রোন হামলায় ৩৪টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক মেরামতের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রেই ইয়ারমাক। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
সৌদি আরবের জেদ্দায় জেলেনস্কি ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে বৈঠকের কথা রয়েছে। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দল কৃষ্ণ সাগর এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধের পাশাপাশি বন্দী মুক্তির প্রস্তাব দিতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৈঠকে ইউক্রেনের বিরল খনিজ পদার্থের প্রবেশাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত রয়েছে ইউক্রেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ফল ‘পূর্ণ গঠনমূলক’ হবে এবং তিনি যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনার ফলপ্রসূতা আশা করছেন। তিনি আরও জানান, আলোচনার একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশ ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি সম্পর্কিত।
এদিকে, জি-৭ দেশগুলোর মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কানাডার কুইবেকে জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রদর্শনের দাবি জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কর্তৃক গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান স্থগিত করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন একজন ডেমোক্রেট সিনেটর। তিনি বলেছেন, এর ফলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়েছে। ট্রাম্পের উপদেষ্টা ইলন মাস্ককে তিনি ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেও মন্তব্য করেন।
এছাড়াও, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মস্কো যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। একইসাথে, রাশিয়ান বিলিয়নেয়ার সুলেমান কেরিমভের একটি বিলাসবহুল ইয়ট নিলামে তোলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: The Guardian