ফিলিপাইনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তাকে আটক করা হয়।
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে হাজারো মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন দুয়ার্তে।
তার শাসনামলে মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যা ‘ড্রাগ ওয়ার’ নামে পরিচিত।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
নিহতদের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তরুণদের সংখ্যাই বেশি ছিল।
দুয়ার্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরাসরি তার সমালোচকদের হত্যার হুমকি দিতেন এবং মাদক কারবারিদের নির্মূল করার জন্য ‘মৃত্যুদল’ গঠন করেছিলেন।
তবে দুয়ার্তে বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, মাদক সমস্যার সমাধানে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার মানতে রাজি নন।
গ্রেপ্তারের কয়েক দিন আগেও তিনি আইসিসিকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রেখেছিলেন।
আটকের পর দুয়ার্তেকে নেদারল্যান্ডসের হেগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে আইসিসির বিচারে তাকে অভিযুক্ত করা হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, দুয়ার্তের গ্রেপ্তার হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণও রয়েছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে তার মেয়ে সারা দুয়ার্তে-কার্পিওর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এর অন্যতম কারণ।
আইসিসি একটি আন্তর্জাতিক আদালত, যা যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা এবং আগ্রাসনের মতো গুরুতর অপরাধের বিচার করে।
আদালত কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না, তবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করতে পারে।
ফিলিপাইন ২০১৫ সালে আইসিসির সদস্যপদ লাভ করে, তবে ২০১৯ সালে দুয়ার্তে সরকার এই থেকে বের হয়ে যায়।
তবে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য থাকাকালীন সময়ে সংঘটিত অপরাধের বিচার তারা করতে পারে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, দুয়ার্তের গ্রেপ্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর মাধ্যমে ফিলিপাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিচার হতে পারে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ সংঘটনে বাধা সৃষ্টি হবে।
তবে আইসিসির বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং জটিল হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন