ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তে মাদকবিরোধী যুদ্ধের নামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর তিনি এই বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ফেসবুকে প্রকাশিত এই ভিডিওটিতে দুয়ার্তেকে একটি বিমানে বসে কথা বলতে দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার পথে এটি ধারণ করা হয়েছে।
ভিডিওতে তিনি বলেন, “আমিই আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছি।
আমি তাদের রক্ষা করার কথা দিয়েছিলাম এবং এর জন্য আমিই দায়ী।”
দুয়ার্তে আরও বলেন, “আমি পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে বলেছি যে, এটা আমার কাজ এবং আমিই এর জন্য দায়ী।”
২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুয়ার্তের মাদকবিরোধী অভিযান ব্যাপক সমালোচিত হয়।
তার আমলে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৬ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
আইসিসি’র গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুয়ার্তে মাদক ব্যবসায়ী ও ব্যবহারকারীদের হত্যার জন্য একটি ডেথ স্কোয়াড তৈরি, তাদের অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহ করেছেন।
আইসিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুয়ার্তেকে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তাকে ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তার করে এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তাকে নেদারল্যান্ডসের একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে এবং কয়েকদিনের মধ্যে হেগে আইসিসি বিচারকের সামনে হাজির করা হবে।
দুয়ার্তের মেয়ে ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুয়ার্তে তার বাবার আইনি সহায়তার জন্য হেগে পৌঁছেছেন।
ভাইস প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তিনি শুক্রবার হেগে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক দুয়ার্তের গ্রেপ্তারকে “হাজারো হত্যার শিকার ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
চীনের পক্ষ থেকে আইসিসিকে “রাজনৈতিকীকরণ” ও “দ্বৈত নীতি” পরিহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা দুয়ার্তের মামলার বিষয়ে “নজর রাখছে” বলেও জানিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা