ছোট্ট সোনামণির সুস্বাস্থ্য: পানীয় নির্বাচনে অভিভাবকদের করনীয়
শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি পানীয়ের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি গবেষণায় শিশুদের পানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর পানীয় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পানীয় হল জল। পর্যাপ্ত জল পান করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল থাকে এবং এটি শিশুদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য অপরিহার্য। স্বাভাবিকভাবে, ৫ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিন প্রায় ১ লিটারের মতো জল পান করা উচিত। ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এটি ১.৬ থেকে ১.৮ লিটার এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য ২ থেকে ২.৬ লিটার পর্যন্ত হতে পারে। তবে, শারীরিক পরিশ্রম ও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এই পরিমাণে পরিবর্তন আসতে পারে।
দুধ শিশুদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পানীয়। পুষ্টিবিদরা ৫ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০০ মিলিলিটার এবং এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের ৬০০ মিলিলিটার পর্যন্ত দুধ পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে, বাজারে পাওয়া যাওয়া ফ্লেভার যুক্ত দুধ, যেমন চকোলেট মিল্ক বা স্ট্রবেরি মিল্ক-এর বদলে স্বাভাবিক দুধ খাওয়ানো উচিত। কারণ, এইসব দুধে অতিরিক্ত চিনি মেশানো থাকে যা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ফলের রস শিশুদের স্বাস্থ্যকর পানীয়ের একটি অংশ হতে পারে, তবে তা পরিমাণ মতো হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞগণ ৫ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১২০-১৮০ মিলিলিটার, ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ১৮০-২৪০ মিলিলিটার এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ২৪০ মিলিলিটারের বেশি ফলের রস পান করতে নিষেধ করেন। শিশুদের জন্য প্যাকেটজাত ফলের রসের পরিবর্তে তাজা ফল খাওয়ানো ভালো।
শিশুদের জন্য ক্ষতিকর পানীয়গুলো সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন কোমল পানীয়, যেমন সোডা বা চিনিযুক্ত ফলের পানীয় শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। এইসব পানীয়তে অতিরিক্ত চিনি থাকে, যা শিশুদের দাঁতের ক্ষয় এবং অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া, কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয়ও শিশুদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত। স্পোর্টস ড্রিংকস বা এনার্জি ড্রিংকস-এর মতো পানীয়গুলোও শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের পানীয় নির্বাচনে অভিভাবকদের সচেতনতা তাদের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য খুবই জরুরি। খাবার এবং পানীয়ের সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন