রঙের উৎসব হোলি, যা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে ভারত ও নেপালে উদযাপিত হয়।
এই উৎসব মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের আনন্দ ও উদ্দীপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
শীতের বিদায় ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক হিসেবে এই উৎসব পালিত হয়।
উৎসবটিতে সকলে রঙ খেলার পাশাপাশি গান ও নাচের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করে থাকে।
হোলি উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো রং খেলা।
আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই মিলে একে অপরের গায়ে রঙ ছিটিয়ে দেয়।
সাধারণত সাদা পোশাকে সজ্জিত হয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই উৎসবে মেতে ওঠে।
শিশুদেরও দেখা যায় রঙিন আবির বা বেলুন নিয়ে উৎসবে যোগদান করতে।
এছাড়া, বিভিন্ন স্থানে জল কামান দিয়েও চলে রঙ খেলার উৎসব।
ভারতে হোলির উৎসবে বিশেষ কিছু খাবারেরও আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ঠান্ডাই, যা দুধ, এলাচ ও শুকনো ফল দিয়ে তৈরি করা হয়।
এছাড়াও গুজিয়া নামক একটি মিষ্টি খাবারও এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটি ময়দা দিয়ে তৈরি, যা দুধের ছানা, বাদাম ও শুকনো ফল দিয়ে ভরা থাকে।
কোনো কোনো স্থানে ভাং নামক একটি পানীয়ের প্রচলন আছে, যা মাদকদ্রব্য মিশ্রিত একটি বিশেষ পানীয়।
এটি মূলত শিবের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং উৎসবের একটি অংশ হিসেবে অনেকে পান করে থাকে।
তবে এর ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
হোলির উৎসবের আগের রাতে অনেক জায়গায় বিশাল আকারের অগ্নিকুণ্ড জ্বালানো হয়, যা অশুভ শক্তির বিনাশ ও ভালো শক্তির জয়কে নির্দেশ করে।
পরিবারের সদস্যরা এই আগুনের চারপাশে একত্রিত হয়ে গান ও নাচের মধ্যে দিয়ে সময় কাটায় এবং হিন্দু দেবদেবীর আরাধনা করে।
ভারতে হোলি উৎসবের কিছু অঞ্চলে ভিন্ন ধরনের রীতিও প্রচলিত আছে।
উদাহরণস্বরূপ, উত্তর প্রদেশের কিছু স্থানে “লাঠমার হোলি” পালিত হয়, যেখানে মহিলারা পুরুষদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
এটি একটি বিশেষ ধরনের উৎসব, যা হোলির একটি অংশ হিসেবে পালিত হয়।
হোলি উৎসব আনন্দ, মিলন ও ভালোবাসার উৎসব।
এটি মানুষের মধ্যে একতা ও সৌহার্দ্যের বার্তা বয়ে আনে।
উৎসবটি শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি সংস্কৃতি, যা মানুষকে একত্রিত করে এবং সমাজে আনন্দের ঢেউ তোলে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস