গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসনের জন্য পূর্ব আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশ দুটি সুদান, সোমালিয়া এবং সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধপরবর্তী গাজাকে নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার ২০ লক্ষাধিক মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।
এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে একটি আবাসন প্রকল্প তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে।
যদিও ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
তাদের দাবি, এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং জোর করে বাস্তুচ্যুত করার শামিল।
এছাড়া, আরব দেশগুলোও এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে ফিলিস্তিনিদের তাদের স্থানে পুনর্বাসনের জন্য বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, সুদানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সোমালিয়া এবং সোমালিল্যান্ড জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, দেশগুলোকে রাজি করাতে আর্থিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
যেমন, সুদানের ঋণ মওকুফ, সামরিক সহায়তা এবং প্রযুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছিল সুদান।
কিন্তু বর্তমানে সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমালিল্যান্ড, যা আন্তর্জাতিকভাবে এখনো স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো করার একটি সুযোগ তৈরি হতে পারে।
কৌশলগত দিক থেকেও সোমালিল্যান্ডের গুরুত্ব রয়েছে।
কারণ, এটি বাব-el-মান্দেব প্রণালীর কাছে অবস্থিত।
এই প্রণালী দিয়ে লোহিত সাগর হয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথ চলাচল করে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন দীর্ঘদিনের।
বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল।
এমন পরিস্থিতিতে গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের এই প্রস্তাব নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস