মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সিনেটে একটি রিপাবলিকান প্রস্তাবিত বিল পাশ হয়েছে, যার মাধ্যমে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ফেডারেল সংস্থাগুলোর কার্যক্রম চালানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
ডেমোক্র্যাটদের আপত্তির মধ্যেই বিলটি পাস হওয়ায় অচলাবস্থা এড়ানো সম্ভব হয়েছে, তবে এর ফলস্বরূপ ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ।
বিলটি পাসের পক্ষে ৫৪টি ভোট এবং বিপক্ষে ছিল ৪৬টি ভোট।
ডেমোক্রেটদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট সংগ্রহ করে এটি আইনে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে যায়।
ডেমোক্র্যাট শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, সিনেটের প্রভাবশালী নেতা চাক শুমার এই বিলের মাধ্যমে রিপাবলিকান এবং তাদের মিত্র, ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের সুযোগ নষ্ট করেছেন।
তারা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে সরকারি কার্যক্রমের ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে।
তবে শুমার জানিয়েছেন, অর্থ বরাদ্দের অভাবে সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে, মাস্কের তথাকথিত ‘সরকারি কার্যকারিতা বিভাগ’ (ডোগ) এই সংকটকে কাজে লাগিয়ে আরও ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারতো।
এই বিল নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ প্রতিনিধি পরিষদে প্রায় সকল ডেমোক্র্যাট সদস্য এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
হাউস ডেমোক্র্যাটরা চান, সিনেটে তাদের সহকর্মীরা যেন এই বিল আটকে দেন, যা তাদের মতে ট্রাম্প ও মাস্ককে উৎসাহিত করবে এবং মার্কিন সরকারের সংস্কারের পথ খুলে দেবে।
ডেমোক্র্যাট দলের অনেক সদস্য মনে করেন, এই বিলটি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
তারা সরকারের কার্যক্রম চালু রাখার জন্য স্বল্প মেয়াদী একটি প্রস্তাব চেয়েছিলেন, যা আলোচনার মাধ্যমে একটি দ্বিদলীয় সমঝোতায় পৌঁছাতে সহায়তা করতো।
তবে শেষ পর্যন্ত সিনেটে রিপাবলিকানদের আনা বিলটিই গৃহীত হয়।
কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজসহ অনেকে শুমারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন।
তাদের মতে, এটি রিপাবলিকানদের কাছে নতি স্বীকারের শামিল।
বিলটি নিয়ে সিনেটে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা যায়।
বিরোধীরা বলছেন, এই বিলটি ট্রাম্পকে তার পছন্দের প্রকল্পগুলোতে ইচ্ছেমতো অর্থ ব্যয় করার স্বাধীনতা দেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিল পাস হওয়ায় ডেমোক্রেটদের মধ্যে হতাশা বেড়েছে এবং দলের অভ্যন্তরে বিভেদ আরও স্পষ্ট হয়েছে।
বিলটি নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
কেউ কেউ মনে করছেন, এর ফলে সরকারি কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়বে, আবার কারো কারো মতে, এটি সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান